পরীক্ষার ফল প্রকাশকে কেন্দ্র করে বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের। প্রথম বর্ষের পর বিএসসি, বিকম অনার্স ও পাশ কোর্সের পার্ট ২-র ফল প্রকাশ হলেও তা বিভিন্ন ক্ষেত্রেই অসম্পূর্ণ ও ভুলে ভরা বলে অভিযোগ করল এসএফআই।
এসএফআই-এর তরফে রবিবার একটি সাংবাদিক বৈঠক করে ফেব্রুয়ারিতে প্রাকাশিত পার্ট-১ পরীক্ষার ফলাফলের কয়েকটি ভ্রান্তি তুলে ধরা হয়। আসানসোল বিবি কলেজের পদার্থবিদ্যার এক ছাত্র দু’টি মার্কশিট পেয়েছেন বলে এসএফআই নেতৃত্বের দাবি। ওই দু’টি মার্কশিটের একটিতে তাঁকে প্রাকটিক্যাল পরীক্ষায় গরহাজির দেখানো হয়েছে। অথচ অন্য মার্কশিটটিতে ওই ছাত্র প্রাকটিক্যালে পাশ করেছেন। টিডিবি কলেজের ৯ জন পড়ুয়া সংশোধন পদ্ধতিতে পরীক্ষা দিলেও তাদের ফল এখনও প্রকাশত করা হয়নি বলে অভিযোগ। বর্ধমান রাজ কলেজের রসায়ন বিভাগের শতকরা ৬০ শতাংশ পড়ুয়ার পার্ট ২-র ফলাফল অসর্ম্পূণ বলে এসএফআই নেতৃত্বের দাবি। আবার বীরভূমের সাঁইথিয়া কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা অনার্সের এক পড়ুয়া একটি পেপারে মোট নম্বর ১২৫-র পুরোটাই পেয়েছেন। এসএফআই-এর জেলা সম্পদাক দীপঙ্কর দে ও রাজ্য কমিটির সদস্য বিনোদ ঘোষদের অভিযোগ, “প্রথম বর্ষের ফলাফলের ভ্রান্তিগুলি এখনও শুধরে নেওয়া হয়নি। অযোগ্য এজেন্সিকে ফল প্রকাশের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলেই এমন অবস্থা।”
উল্লেখ্য গত ২০ মার্চ রাতে দিনভর রেজিস্ট্রার রজত ভট্টাচার্য ঘেরাও হওয়ার পরে পার্ট ২-র ফল প্রকাশিত হয়। কিন্তু পরদিন থেকেই বিভিন্ন কলেজের পড়ুয়ারা অভিযোগ জানাতে থাকেন, ওই ফলাফল অসর্ম্পূণ। পরীক্ষার্থীদের একাংশ জানান, পরীক্ষার পর ন’মাস কেটে গেলেও ফল প্রকাশ হয়নি। শেষ পর্যন্ত মাত্র ঘন্টা দু’য়েকের চেষ্টায় ফল প্রকাশ করতে গিয়েই এই বিপত্তি। সমস্যার কথা মেনে নিয়েই পরীক্ষা নিয়ামক দীপককুমার সোম বলেন, “নিখুঁত ভাবে ফল প্রকাশের চেষ্টা চলছে। ৪ জন আধিকারিককে বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে।” তবে সোমবার থেকে পার্ট-২ পরীক্ষার মার্কশিট দেওয়া হবে এবং কলেজগুলিকে ওই মর্মে এসএমএসও পাঠানো হয়েছে বলে জানান দীপকবাবু।
ফলাফলে ভ্রান্তির কথা স্বীকার করে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম বলেন, “শুধু সংশ্লিষ্ট এজেন্সিই নয়, ফল প্রকাশের সঙ্গে যুক্ত পরীক্ষা বিভাগের আধিকারিক, কর্মী ও পরীক্ষকেরাও ভুলের জন্য দায়ী।” ছাত্র সংসদের সভাপতি প্রদীপ বাজপেয়ীর দাবি, “কেউ ৫ নম্বর পেয়ে পাশ করেছেন। আবার কেউ ৫৩ পেয়েও অকৃতকার্য। পার্ট-২ প্রাকটিক্যাল পরীক্ষায় কেউ আবার ১০০ মোট নম্বরের মধ্যে ১০২ পেয়েছেন। পুরো বিষয়টির তদন্তের আর্জি জানাচ্ছি আমরা।”