coronavirus

আবার নমুনা না জমে যায়, বাড়ছে চিন্তা

পূর্ব বর্ধমানে প্রাথমিক স্তরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষার ব্যবস্থা গড়া হয়েছে। কিন্তু সেখানে পরিকাঠামোগত ঘাটতি রয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২০ ০৪:২০
Share:

প্রতীকী চিত্র।

করোনা-সংক্রমণ আটকাতে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানোর দাবি উঠছে নানা মহল থেকে। নমুনা পরীক্ষায় জোর দিতে বলছে রাজ্য সরকারও। পূর্ব বর্ধমানে প্রাথমিক স্তরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষার ব্যবস্থা গড়া হয়েছে। কিন্তু সেখানে পরিকাঠামোগত ঘাটতি রয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে।

Advertisement

চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, কিছু দিন ধরে তুলনামূলক ভাবে নমুনা পরীক্ষা কম হচ্ছে। ‘ট্রু-ন্যাট’ যন্ত্রে লালারসের নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে কোনও নমুনা ‘পজ়িটিভ’ হলে তা নিশ্চিত করতে ‘আরটি-পিসিআর’ যন্ত্রে পরীক্ষা করতে হয়। ওই যন্ত্রে পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহের বিশদ তথ্য নির্দিষ্ট ‘অ্যাপস’ (আরটি-পিসিআর অ্যাপস) ব্যবহার করে ‘আপলোড’ করতে হয়। কিন্তু মাঝে ওই পদ্ধতিতে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছিল।

রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী, পূর্ব বর্ধমানে প্রতিদিন গড়ে ৭৫৬টি নমুনা পরীক্ষা করতে হবে। অথচ, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে সব মিলিয়ে সাড়ে পাঁচশোর মতো নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব। মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক দিন ধরে ৪০০-৪২৫টির বেশি নমুনা পরীক্ষা করা যাচ্ছে না। এ দিকে, জেলায় প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে করোনা সংক্রমণের হার বাড়ছে। মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সুহৃতা পাল বলেন, ‘‘মাঝে আরটি-পিসিআর অ্যাপসে সমস্যা হয়েছিল। আবার ‘পজ়িটিভ’ রিপোর্টের সংখ্যা বাড়ছে। ‘পজ়িটিভ’ রিপোর্টের ক্ষেত্রে তিন বার করে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হচ্ছে। দিনের শেষে, গড়ে ৪২৫টির মতো নমুনা পরীক্ষা করা যাচ্ছে।’’

Advertisement

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে বিশদে জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, নমুনা সংগ্রহ করার পদ্ধতিতে ক্রমান্বয়ে দেরি হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে জেলার অর্ধেক নমুনা কলকাতার ‘নাইসেড’-এর ল্যাবরেটরিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় বলেন, ‘‘জেলার বিভিন্ন ‘কিয়স্ক’ থেকে যত নমুনা সংগ্রহ হচ্ছে, তার অর্ধেক কলকাতার নাইসেডের ল্যাবরেটরিতে রবিবার থেকে পাঠানো শুরু করেছি।’’

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বুধবার পর্যন্ত জেলায় ৩৬,২৩৭টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষা করা হয়েছে ৩২,৫৫২টি নমুনা। অর্থাৎ, সাড়ে তিন হাজারের বেশি নমুনা জমে রয়েছে। যা নষ্টের আশঙ্কা রয়েছে। জেলার স্বাস্থ্য-কর্তাদের আশঙ্কা, আগের মতো ফের নমুনা জমে যাওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে।

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে ‘ভাইরোলজি রিসার্চ অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরি’ (ভিআরডিএল) পরিকাঠামো গড়ার কথা হয়েছিল। সেখানে আরও একটি ‘আরটি-পিসিআর’ যন্ত্র বসার কথা ছিল। তবে এখনও সেই পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি। মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ ল্যাবরেটরির জন্য ঘর, প্রয়োজনীয় মাইক্রো বায়োলজিস্ট, টেকনিশিয়ানের ব্যবস্থা করে রেখেছেন। কিন্তু ঘরে ওই যন্ত্র বসানোর মতো বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম বা সংযোগ তৈরি হয়নি। স্বাস্থ্যভবনে তার রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে মেডিক্যাল কলেজের তরফে। জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী বলেন, ‘‘ওই যন্ত্র এসে গেলে দিনে হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হবে।’’ (‌‌‌শেষ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement