প্রতীকী ছবি
করোনা-সংক্রমণ ঠেকাতে প্রয়োজনীয় বিধিনিষেধ বলবৎ করার প্রশ্নে আরও কঠোর হচ্ছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন। সোমবার প্রশাসনিক আধিকারিকদের বৈঠকে এই বিষয়ে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, বেড়েছে ভিন্-রাজ্য থেকে এই জেলায় আসা মানুষজনের উপরে নজরদারি। এই সময়ে বিদেশ থেকে আসা মানুষজনকে চিহ্নিত করে বাড়তি নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকার নির্দেশ অমান্য করে, কেউ রাস্তায় বেরোলে তাঁদের পাকড়াও করে সরকারি ‘কোয়রান্টিন সেন্টার’-এ পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ জন্য সরকারি ‘কোয়রান্টিন সেন্টার’-এ শয্যা সংখ্যা আরও বাড়ানো হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে অতিরিক্ত জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি জানিয়েছেন, এই সময়ে বিদেশ থেকে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় এসেছেন প্রায় ২৭৫ জন। সোমবার থেকে শুরু হওয়া সপ্তাহে মূলত নজরদারি বেড়েছে তাঁদের জন্যই। প্রথম থেকেই বিদেশ থেকে আগতদের আলাদা ভাবে চিহ্নিত করে ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অবশ্য ভিন্-রাজ্য থেকে এই জেলায় আসা মানুষজনকেও ছাড় দেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন জেলা আধিকারিকেরা।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েকদিনে ভিন্-রাজ্য থেকে এই জেলায় এসেছেন ১,৭৬৭ জন। তাঁদের সকলকেই ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা নিয়মিত হোম কোয়রান্টিনে থাকা মানুষজনের শারীরিক খবর নিচ্ছেন। তাঁরা হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকছেন কি না সে খবরও রাখা হচ্ছে। তবু নানা প্রান্তে অভিযোগ উঠেছে প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকছেন না অনেকে।
অতিরিক্ত জেলাশাসক বলেন, ‘‘এই বেনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। এখনও পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মেলেনি। ভবিষ্যতেও এই ধারা বজায় রাখতে আরও কড়া নজরদারির সিদ্ধান্ত হয়েছে। হোম কোয়রান্টিনে না থাকলে সরকারি কোয়রান্টিনে ভরে দেওয়া হবে।’’ তিনি জানিয়েছেন, জেলায় ১০ হাজার শয্যা বিশিষ্ট একাধিক সরকারি ‘কোয়রান্টিন সেন্টার’ বানানো হয়েছে।
এ ছাড়া, পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর জোগান ঠিক রাখতে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের একাধিক দল গঠন করা হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত জেলাশাসক। শনি ও রবিবার শিল্পাঞ্চলের কোথাও কোথাও দোকানদারদের বিরুদ্ধে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম বেশি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই প্রবণতা রুখতে ওই দলগুলিকে আরও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি, দুঃস্থদের সাহায্য করতে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে শিল্পাঞ্চলের একাধিক স্বেচ্ছাসেবী ও সামাজিক সংগঠনকে জুড়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক।