ঘেরা পথ। নিজস্ব চিত্র
করোনা নিয়ে গুজবের জেরে ফের তেতে উঠল দুর্গাপুর। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে এমন এক জনের দেহ বীরভানপুর শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, এই গুজবের জেরে রাত জেগে শ্মশান ঘিরে রাখলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। বাঁশের বেড়া দিয়ে আটকানো হয় শ্মশানে ঢোকার রাস্তায় ক্যানালের উপরের ব্রিজ।
মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরের কোনও বাসিন্দা এখনও পর্যন্ত করোনায় সংক্রমিত হননি। অথচ, এলাকার একটি হাসপাতাল থেকে দেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, এই গুজব ছড়িয়ে পড়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। এর পরেই বীরভানপুর, ডিপিএল টাউনশিপ ও আশপাশের বাসিন্দাদের একাংশ রাস্তায় নেমে আসেন। শ্মশানে ঢোকার সব রাস্তা বাঁশ দিয়ে ঘিরে, পাথরের বোল্ডার ফেলে বন্ধ করে দেওয়া হয়। মহিলারাও রাস্তায় নেমে পড়েন।
প্রায় ভোর পর্যন্ত এই পরিস্থিতি চলে। বিপাকে পড়তে হয় অন্য শবযাত্রীদের। ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ দেখিয়ে তবে শ্মশানে ঢোকার ছাড়পত্র মেলে তাঁদের। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত রোগীর দেহ সৎকার করতে শ্মশানে আনা হলে, এই এলাকায় সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। তা তাঁরা হতে দেবেন না। কিন্তু এ ভাবে শ্মশানে ঢোকার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া তো বেআইনি? তাঁদের দাবি, নিজেদের সুরক্ষিত রাখার অধিকার তাঁদের আছে।
এর আগে ডিএসপি টাউনশিপের একটি স্কুলে ‘কোয়রান্টিন’ সেন্টার গড়া হবে, এই গুজবের জেরে রীতিমতো বাঁশ দিয়ে স্কুলের গেট ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। মহকুমাশাসক অনির্বাণ কোলে জানান, কোনও স্কুলে ‘কোয়রান্টিন’ সেন্টার গড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি। তা সত্ত্বেও বিক্ষোভ দেখান অনেকে। তা ছাড়া, সরকারের পক্ষ থেকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত কারও দেহ সৎকারের সময়ে কী-কী সাবধানতা নেওয়া হচ্ছে, তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোনও ভাবে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই, সে ব্যপারে আশ্বস্ত করা হয়েছে। তার পরেও বৃহস্পতিবার রাত জেগে প্রায় দশ ঘণ্টা ধরে শ্মশান ঘিরে রাখেন বাসিন্দারা। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘একটাই কথা বলার আছে। গুজব থেকে সবাই দূরে থাকুন।’’