Coronavirus

‘লকডাউন’-এ থিকথিকে ভিড়

বর্ধমান শহর থেকে কৃষক সেতু পেরিয়ে বাঁকুড়া মোড়ের দিকে যাওয়ার পথে পলেমপুর চোখে পড়ে এই রকম ছবি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২০ ০৩:২০
Share:

পলেমপুরের বাজারে প্রায়শই দেখা যাচ্ছে এই রকম ছবি। নিজস্ব চিত্র

সেতু থেকে নামার মুখে দু’দিকে চোখ পড়লে মনে হতে পারে, খেলা শেষে দর্শকের ভিড় অথবা কোনও রাজনৈতিক দলের সমাবেশ। ‘লকডাউন’-এর মধ্যে পারস্পরিক দূরত্ব তো দূরের কথা, তিলধারণের জায়গা নেই।

Advertisement

বর্ধমান শহর থেকে কৃষক সেতু পেরিয়ে বাঁকুড়া মোড়ের দিকে যাওয়ার পথে পলেমপুর চোখে পড়ে এই রকম ছবি। এক দিকে রায়না ও অন্য দিকে খণ্ডঘোষ। সেতুর দু’ধারে বাজার বসে। দামোদরের চর থেকে আনাজ নিয়ে আসেন চাষিরা। ফসল কিনতে ভোর থেকে ভিড় জমান পাইকার থেকে খুচরো ব্যবসায়ীরা। ‘লকডাউন’-এর সময়েও তার বিরাম নেই। শুধু পলেমপুর নয়, ‘লকডাউন’ উপেক্ষা করে বাজার-দোকানে ভিড় জমার অভিযোগ উঠছে বর্ধমান শহর, মেমারি শহরের নানা এলাকাতেও।

করোনা প্রতিরোধে সচেতন করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রেকর্ড করা ভাষণ শোনানো হচ্ছে নানা জায়গায়। অকারণে বাড়ির বাইরে যেতে নিষেধ করা হচ্ছে প্রশাসনের তরফে। তা সত্ত্বেও প্রতিদিন সকাল থেকে রাস্তায় ভিড় দেখা যাচ্ছে নানা জায়গায়। বাসিন্দাদের অনেকের অভিযোগ, বিভিন্ন বাজারে পা রাখা দায় হয়ে পড়ছে। সাইকেল-মোটরবাইকে রাস্তায় ঘোরার প্রবণতাও দেখা দিচ্ছে।

Advertisement

এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, ‘লকডাউন’ শুরুর পরে প্রথম দু’দিন পুলিশের ‘কড়া’ ভূমিকা দেখে অনেকেই বাইরে পা রাখার সাহস দেখাননি। বাজারও ফাঁকা ছিল। কিন্তু তার পর থেকেই বাজারগুলিতে ভিড় জমতে শুরু করেছে। বর্ধমানের নীলপুর বা রানিগঞ্জ বাজার— সব জায়গাতেই সেই ছবি। একই চিত্র মেমারি শহরের নানা বাজার এলাকাতেও। পুলিশ জানায়, কয়েক দিনের অভিযানে বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। তার পরেও টনক নড়েনি অনেকের। বামুনপাড়া, সোমেশ্বরতলার কাছে বাজার-সহ বিভিন্ন জায়গায় ভিড় হচ্ছে। মানুষজনকে আড্ডা দিতেও দেখা যাচ্ছে, এমনকি কিছু জায়গায় টোটোও চলছে বলে অভিযোগ।

রবিবার পুলিশ জানায়, বর্ধমানের নীলপুরের বাজার সরানোর কথা ভাবা হয়েছে। বর্ধমানের আইসি পিন্টু সাহা জানান, বারবার আবেদন করা সত্ত্বেও নির্দিষ্ট দূরত্ব রাখার কথা মানছেন না অনেকে। বাধ্য হয়ে বাজার সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঠিক হয়েছে, মাছ ও আনাজ বিক্রি হবে চৌরঙ্গি ক্লাবের মাঠে। দূরত্ব রেখে বড় মাঠে বসবেন বিক্রেতারা।

পলেমপুর বাজার সম্প্রসারণের চিন্তাভাবনা নিয়েছে পুলিশ। বাজারের কাছে ফুটবল মাঠে বিক্রেতাদের বসানোর কথা ভাবা হয়েছে। পুলিশ জানায়, আগে বর্ধমান-আরামবাগ রাস্তার উপরেই ডালা সাজিয়ে ব্যবসা করতেন বিক্রেতারা। দুর্ঘটনার জন্য কিছু দিন আগে সেখান থেকে তাঁদের সরানো হয়। সেতুতে ওঠার মুখে দু’দিকে ফাঁকা জায়গায় ব্যবসা করছেন তাঁরা। কিন্তু সেখানে ‘লকডাউন’-এর মধ্যেও অন্য সময়ের মতোই থিকথিকে ভিড় হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে। এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘বাজার সম্প্রসারণ করা হবে। তার পরেও সচেতন না হলে গ্রেফতার করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement