প্রতীকী ছবি
‘লকডাউন’-এর ছাব্বিশ দিন পার করেও ভিড় কমছিল না পূর্ব বর্ধমানের কালনার চকবাজারে। সতর্কতা, নজরদারির মধ্যেও ভোর থেকে মাছ, আনাজ কিনতে ভিড় জমাচ্ছিলেন ক্রেতারা। নানা অজুহাত দেখিয়ে ভিন্ জেলা থেকে ফেরিঘাটে পারাপারও চলছিল। তবে আজ, মঙ্গলবার থেকে ওই বাজার সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কালনা মহকুমা প্রশাসন। নৃসিংহপুর ঘাটে লঞ্চ চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হলে বলেও জানা গিয়েছে।
চকবাজারে ছোট জায়গার মধ্যেই মাছ, আনাজ, চাল, কাপড়, ফল-সহ নানা পাইকারি এবং খুচরো ব্যবসা চলে। যত দিন যাচ্ছিল বাজারটি ততই উদ্বেগ বাড়াচ্ছিল প্রশাসনের। রবিবারও গা ঘেঁষাঘেঁষি করে খরিদ্দারদের অপেক্ষার ছবি চোখে পড়ে। সন্ধ্যায় কালনার পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ, চকবাজার কমিটির সম্পাদক চাঁদু ভারতীদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন মহকুমাশাসক সুমনসৌরভ মোহান্তি। সিদ্ধান্ত হয়, চকবাজারের খুচরো মাছ, মাংসের বাজার সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে কাছাকাছি রাজবাড়ি মাঠে। আর মাছ বাজার যে ছাউনির নীচে বসত, সেখানে ছড়িয়েছিটিয়ে বসানো হবে কিছু আনাজের দোকান। বাজার এলাকায় কড়া হাতে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করবে পুলিশ। আইন ভাঙলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাধারণ মানুষের জমায়েত রুখতে লাগাতার মাইকে প্রচার চালাবে নিয়ন্ত্রিত বাজার কমিটিও।
সোমবার সকাল থেকে মহকুমাশাসক এবং পুলিশ কর্তারা বাজার পরিদর্শনও করেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাইকে প্রচার এবং ভিড় কমাতে প্রচুর সিভিল ডিফেন্স কর্মী মোতায়েন করা হয়। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘মাছ ব্যবসায়ীরা যাতে রাজবাড়ি মাঠ এবং কাছাকাছি একটি জায়গায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বসতে পারেন, সে জন্য ৫০টি ত্রিপল দিচ্ছে পুরসভা।’’ বাজার কমিটির সম্পাদক চাঁদুবাবুও জানান, আড়তগুলিতে ভিড় কমানোর জন্য পাঁচ জন করে এক-এক বারে ঢোকানো হবে। মাস্ক ছাড়া, কাউকে বাজারে ঢুকতে দেওয়া হবে না। পাশাপাশি, নির্দিষ্ট দূরত্ব যাতে ব্যবসায়ীরা বজায় রাখেন, তার প্রচারও চালানো হচ্ছে।
এ দিন নিভুজিবাজার এলাকাও পরিদর্শন করেন মহকুমাশাসক। ঠিক হয়, এই বাজারটিও কাছাকাছি একটি বড় জায়গায় নিয়ে যাওয়া হবে। বাজারটি সরানোর জন্য ব্লক এবং স্থানীয় হাটকালনা পঞ্চায়েতের তরফে প্রস্তুতি শুরু করা হয়। মহকুমাশাসক জানান, ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য নিভুজিবাজার এলাকার বাজারটি যেখানে সরানো হবে সেখানে ঢোকা এবং বেরনোর ব্যাপারে নিয়ন্ত্রণ রাখার চেষ্টা হচ্ছে।
নদিয়া জেলায় করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়ার পরেও ,কালনা ও নদিয়ার মধ্যে লঞ্চ পরিষেবা এবং নৌকায় যাত্রী পারাপার চলায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন অনেক মানুষ। ঠিক হয়েছে, দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে লঞ্চ চলাচল করবে। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘নানা ছুতোয় নদীপথে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাতে কেউ যাতায়াত করতে না পারেন, তা কড়া নজরে রাখা হবে। চিকিৎসার প্রয়োজনে কেউ যাতায়াত করতে গেলে তাঁকে উপযুক্ত নথিপত্র জমা দিতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ কিছু ব্যবসার ক্ষেত্রে লঞ্চে যাতায়াতের জন্য নিয়ন্ত্রিত বাজার কমিটি টোকেন ইস্যু করবে।’’