বিছানায় পড়ে স্ত্রী, গাছে স্বামীর দেহ

সুকান্ত সরণির বাসিন্দা শঙ্করবাবুর চণ্ডীদাস বাজারে একটি দোকান ছিল। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, সুচিত্রাদেবী বেশ কিছু দিন ধরেই কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৫৪
Share:

এখানেই মিলেছে দেহ। নিজস্ব চিত্র

এক দম্পতির দেহ উদ্ধার হল। মঙ্গলবার সকালে বেনাচিতির সুভাষপল্লির ঘটনা। পুলিশ জানায়, বাড়িরই একটি গাছে শঙ্কর দে (৬৩) নামে এক বৃদ্ধের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। ঘরের ভিতরে বিছানায় পাওয়া যায় তাঁর স্ত্রী সুচিত্রাদেবীর (৫৯) দেহ। চিকিৎসক পরীক্ষা করে সুচিত্রাদেবীর মৃত্যু ‘স্বাভাবিক’ বলে জানিয়েছেন। পরিবারের দাবি, স্ত্রী’র মৃত্যুর পরেই শোকগ্রস্ত শঙ্করবাবু আত্মঘাতী হয়েছেন।

Advertisement

পড়শি মান্তু ভট্টাচার্য জানান, সকালে কলে জল এসেছে কি না দেখতে বাইরে বেরিয়েছিলেন। সেই সময়েই এক জনের চিৎকার শুনে ওই বাড়ির দিকে ছুটে যান। দেখেন, গাছ থেকে শঙ্করবাবুর দেহ ঝুলছে। মান্তুদেবী, তাঁর স্বামী-সহ পড়শিরা সকলে মিলে ওই বাড়িতে যান। ওই দম্পতির ছেলে সুজয় ও তাঁর স্ত্রী-কে বিষয়টি জানানো হয়। কাছেরই একটি ঘর থেকে ছুটে এসে সুজয় বাবা-মায়ের ঘরে গিয়ে দেখেন, বিছানায় পড়ে রয়েছে মায়ের দেহ। খবর যায় প্রান্তিকা ফাঁড়িতে। এসিপি (পূর্ব) খাণ্ডেলওয়াল উমেশ গণপত ঘটনাস্থলে আসেন তদন্ত করতে। পুলিশ সুজয় ও তাঁর স্ত্রীকে জেরা করে। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়।

সুকান্ত সরণির বাসিন্দা শঙ্করবাবুর চণ্ডীদাস বাজারে একটি দোকান ছিল। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, সুচিত্রাদেবী বেশ কিছু দিন ধরেই কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। নিয়মিত ডায়ালিসিসও হতো। শঙ্করবাবুর শরীরও খুব একটা ভাল যাচ্ছিল না।

Advertisement

কিন্তু কেন এই মৃত্যু? পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ রাতের খাওয়া শেষ হয়। সবকিছুই ঠিকঠাক ছিল বলে দাবি। সুজয় পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, রাতে কোনও রকম অস্বাভাবিক আচরণ দেখা যায়নি। সুচিত্রাদেবীর ভাই স্বপন মিত্র অবশ্য বলেন, ‘‘দিদি ও জামাইবাবু, দু’জনেই অসুস্থ ছিলেন। দু’জনে পরস্পরের উপরে খুবই নির্ভরশীল ছিলেন। এক জন মারা গেলে অন্য জনের কী হবে, তা নিয়েও দু’জনে দুশ্চিন্তা করতেন প্রায়ই। সম্ভবত রাতে দিদির মৃত্যু হওয়ার পরে শোক সামলাতে না পেরে জামাইবাবু আত্মঘাতী হয়েছেন।’’ পড়শি সৌমেন চৌধুরীও জানান, বহু বছর ধরে তাঁরা একই পা়ড়ায় রয়েছেন। কখনওই ওই পরিবারে ঝগড়া বা অশান্তি হতে দেখেননি।

তবে শঙ্করবাবু ওই কারণেই আত্মঘাতী হয়েছেন কি না, আদৌ এটা আত্মহত্যা কি না, সে বিষয়ে এ দিন স্পষ্ট করে কিছু জানায়নি পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলেই মৃত্যুর কারণ পরিষ্কার হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন