রোল-চিকেন পকোড়ায় না, ভিড় ফুচকায়

মাছ ভাত, মাংস ভাতের থালির বদলে কদর বেড়েছে ডিমের ঝোলের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৮ ০১:৩৩
Share:

ভিড়-নেই: অন্য দিনের তুলনায় ফাঁকা ভাতের হোটেল। নিজস্ব চিত্র।

দেড়শো পিস চিকেন ললিপপ নেমেছে দশটায়।

Advertisement

মাছ ভাত, মাংস ভাতের থালির বদলে কদর বেড়েছে ডিমের ঝোলের।

মঙ্গলবার পুরসভার অভিযানের পরে কাটোয়ার রেস্তোরাঁগুলির হাল এমনই। রেস্তোরাঁ মালিকদের দাবি, কলকাতার ভাগাড় কাণ্ডের পরেও বিক্রিতে তেমন প্রভাব পড়েনি। কিন্তু পুর কর্তাদের তল্লাশি বিক্রিবাটা তলানিতে নামিয়ে দিয়েছে।

Advertisement

বুধবার, পঁচিশে বৈশাখের বিকেলে আড্ডা মারতে কাছারি রোডের এক রেস্তোরাঁয় খেতে এসেছিল এক দল কলেজ পড়ুয়া। অর্ডার হল, ভেজ চাউমিন, ভেজ মোমোর। পাশের টেবিলে এক দম্পতিও প্লেটেও ওই খাবার। তাঁদের কথায়, ‘‘পচা মাছ, মাংস খেয়ে শরীর খারার করার চেয়ে নিরামিষই ভাল।’’

সোমবার পুরসভা ও কাটোয়া থানার যৌথ উদ্যোগে শহরের দশটি হোটেল, রেস্তোরাঁয় অভিযান চলে। উদ্ধার হয় রান্না করা পচা ইলিশ, চিংড়ি, পমফ্রেট। মেলে নোংরা তেল, মেয়াদ উত্তীর্ণ জল, শ্যাওলা পড়া মশলা, পচে দুর্গন্ধ বেরোনো বিরিয়ানির চাল সহ একাধিক খাদ্যদ্রব্য। হানা দেওয়া হয় মাংসের দোকানেও। পাঁচটি হোটেল, রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে পুরসভা। গ্রেফতার করা হয় চার জনকে।

এ দিন যাজ্ঞেশ্বরডিহির হিমঘর থেকে উদ্ধার হওয়া পচা ছানা কাণ্ডে হিমঘর কর্তা নন্দনকুমার সেনগুপ্তের বিরুদ্ধে মঙ্গলকোট থানায় অভিযোগ করেছে কৃষি বিপণন দফতর। পুলিশের দাবি, নন্দন পলাতক। ওই হিমঘর বন্ধ করে দিয়েছে মহকুমা প্রশাসন।

এরপর থেকেই শহরের রেস্তোরাঁগুলোয় লাফিয়ে কমেছে খদ্দের। দু’একটি দোকানে খদ্দের এলেও তাঁরা মাছ মাংসের বদলে বেছে নিচ্ছেন সব্জি, পনির ও ডিমের পদ। স্যুপ, ভেজিটেবিল চপ, ভেজ চাউমিনের বিক্রি হলেও ভুলেও পকোড়া, চিলি চিকেনে কামড় বসাচ্ছেন না কেউই। কাছারি রোডের এক রেস্তোরাঁ মালিকের কথায়, ‘‘আমার দোকানের ললিপপ ক্রেতাদের পছন্দ। অধিকাংশ দিনই সন্ধ্যায় ললিপপের অর্ডার থাকে ১২০-১৫০টা। এখন ১০টিও বিক্রি হচ্ছে না।’’ লেনিন সরণিতে ১৮ বছরের রেস্তোরাঁ ব্যবসা জনার্দন দাসের। তিনি বলেন, ‘‘দিনে কেজি তিনেক মাংস কিনতাম। বুধবার এক কেজিও কিনিনি।’’ হোটেলগুলোতেও মাছ-ভাতের বদলে সব্জি ও ডিম-ভাতই বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে দাবি বাসস্ট্যান্ড এলাকার হোটেল মালিক পরেশ দাসের।

তবে ক্যাটারার ব্যবসায় এখনই তেমন প্রভাব পড়েনি বলেই জানালেন ব্যবসায়ী সঞ্জয় দাস। তাঁর কথায়, ‘‘কাটোয়ায় এখনও বিয়েবাড়িতে মাছের পদের চল তেমন নেই। এখানকার বাসিন্দাদের মাংসই বেশি পছন্দ। তবে ভাগাড় কান্ডের পর কি হবে এখনই বলা যাচ্ছে না।’’

পুরসভা মোড়ে ফুচকা খেতে খেতে কলেজ পড়ুয়া অঙ্গনা নাগ, বৈশাখী চট্টোপাধ্যায়রা বলেন, ‘‘পকোড়া, চিকেন রোল থাক। যা দেখছি তাতে ফুচকা,আইসক্রিমই ভাল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন