শুধু সরকারের উপরে নির্ভরতা নয়, আর্থিক স্বয়ম্ভরতায় নজর দিতে হবে কেন্দ্রীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলিকে— বার্তা দিলেন ‘কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ’ (সিএসআইআর)-এর ডিরেক্টর জেনারেল গিরিশ সাহানি। রবিবার দুর্গাপুরের ‘সেন্ট্রাল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ (সিএমইআরআই)-এ এক অনুষ্ঠানে এসে তিনি আরও বলেন, ‘‘আগে কি হয়েছে তা নিয়ে গর্ব থাকবে। কিন্তু সেটাই যথেষ্ট নয়। আত্মবিশ্নেষণ জরুরি। আরও কী করতে হবে তা ভাবা উচিত। তা না হলে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যেতে হবে।’’
সিএসআইআর-এর ৭৫ বছর এবং সিএমইআরআই-এর ৬০ বছর পূর্তিতে এ দিন ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। সেখানে গিরিশবাবু বলেন, ‘‘আমাদের বিভাগীয় মন্ত্রী দু’বছর আগেই বলেছেন, গবেষণাগারে বসে শুধু অ্যাকাডেমিক রিসার্চ, গবেষণাপত্র ছাপানোয় ব্যস্ত থাকলে হবে না। সমাজের প্রয়োজনে লাগে এমন আবিষ্কার করে যেতে হবে। তা না হলে প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে যেতে পারে।’’ এখনই তৎপর না হলে কয়েক বছর পরে পুরো বেতনও না মিলতে পারে বলে সতর্কবার্তা তাঁর। তিনি বলেন, ‘‘দিন বদলেছে। সে ভাবেই প্রতিষ্ঠানগুলিকে ভাবনায় বদল আনতে হবে। গবেষণাগারের পরিকাঠামোর যথাযথ ব্যবহারে প্রয়োজনে বেসরকারি সংস্থাকেও সঙ্গে নেওয়া যেতে পারে।’’
সিএমইআরআই-এর ডিরেক্টর হরিশ হিরানি তাঁর বক্তব্যে ৬০ বছরে প্রতিষ্ঠান কী কী আবিষ্কার করেছে, তা জানান। তিনি বলেন, ‘‘আগে শুধু শিল্পের প্রয়োজনে গবেষণা করেছে সংস্থা। কিন্তু গত কয়েক বছরে সাধারণ মানুষের চাহিদার কথা ভেবে চাষবাস থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যক্ষেত্র, সবেই অবদান রাখছে।’’ তিনি জানান, বিশুদ্ধ পানীয় জলের চাহিদা পূরণে কম দামে আয়রন, আর্সেনিক, ফ্লুরাইড ফিল্টার, প্রতিবন্ধীদের জন্য স্বল্পমূল্যে হুইল চেয়ার, চাষের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি তৈরি হয়েছে। সৌরশক্তি ব্যবহার ও উৎপাদনের আরও নানা পন্থা নিয়ে গবেষণা চলছে। ইতিমধ্যে তিন ধরনের সোলার পাওয়ার ট্রি গড়া হয়েছে।
ডিরেক্টর হরিশবাবুর প্রস্তাব, ‘‘দূষণ রুখতে রাস্তার মোড়ে সৌরশক্তি চালিত এয়ার ফিল্টার লাগানোর কথা ভাবা যেতে পারে। এক দিন পেট্রোল পাম্পের জায়গা নিয়ে নিতে পারে সোলার পাম্প।’’ অনুষ্ঠানে ছিলেন পদ্মশ্রী প্রাপক শিবপুরের কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিরেক্টর অজয়কুমার রায়। এ দিন সিএমইআরআই-এর নতুন ‘লোগো’র উদ্বোধনও হয়।