আউশগ্রামের আইসি শান্তনু অধিকারী সংবর্ধনা দিচ্ছেন পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার সায়ক দাসকে। —নিজস্ব চিত্র।
২০১৭ সালের পর থেকে গত কয়েক বছর খুব বেশি আড়ম্বর ছিল না পুজোয়। তবে এ বার ফের জাঁকজমকে ভরা পুরোনো ছন্দে ফিরল পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম থানার কালীপুজো। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বস্ত্র বিতরণ-সহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে পুজোকে ঘিরে।
গত কয়েক বছর ধরে আউশগ্রাম থানার কালীপুজোয় সে ভাবে কোনও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হত না। তা নিয়ে এলাকাবাসীরাও ঈষৎ অভিমানী ছিলেন। এ বার ফের জমজমাট করে পুজোর আয়োজন হওয়ায় খুশি এলাকাবাসীরাও। স্থানীয় বাসিন্দাদের কেউ কেউ বলছেন, এ বারের পুজোর আয়োজনকে ঘিরে আবার প্রাণ ফিরে পেল আউশগ্রাম থানা।
আউশগ্রাম থানার উদ্যোগে আয়োজিত এই কালীপুজো ও সামাজিক কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ সুপার সায়ক দাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডিএসপি (ডিএনটি) সুব্রত মণ্ডল। থানার উদ্যোগে এলাকার ১১৮০ জন আদিবাসী ও দুঃস্থ পরিবারের হাতে পোশাক এবং শীতবস্ত্র তুলে দেওয়া হয়। পাশাপাশি বিশেষ ভাবে সক্ষম এক নাগরিককে হুইলচেয়ার-সহ ট্রাইসাইকেলও দেওয়া হয়। থানার ২০ জন সিভিক ভলান্টিয়ার ও অন্য বাহিনীর সদস্যদেরও সংবর্ধনা দেন পুলিশ সুপার।
মঙ্গলবার সকালে থানা চত্বরে সামাজিক অনুষ্ঠানের পর সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বুধবারও সন্ধ্যায় থানা চত্বরে সঙ্গীত পরিবেশন করে কলকাতার একটি গানের দল। শুক্রবার কলকাতার এক অপেরা দলের যাত্রাও পরিবেশিত হওয়ার কথা এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চে। যাদের উদ্যোগে এই পুজো, সেই আউশগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক শান্তনু অধিকারী কথায়, একেবারে ‘টাইট শিডিউল’ রয়েছে।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি আউশগ্রাম হাই স্কুলে আয়োজিত হয় বসে আঁকো, নৃত্য ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতা। সেখানে অংশ নেয় এলাকার বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা। প্রতিযোগিতার কৃতীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন পুলিশ সুপার সায়ক দাস। এলাকার বাসিন্দা তথা সাহিত্যিক রাধামাধব মণ্ডল বলেন, “আশু ধানের নাম থেকেই আউশগ্রামের নামকরণ। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরও এসেছিলেন এই ডাঙায় (আউশগ্রাম)। ব্রিটিশ কালেক্টর জন চিপ এই থানার প্রাচীন ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন—যার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আজও এলাকাবাসীর কাছে গর্বের বিষয়।”
জেলা পুলিশ সুপার সায়ক দাস বলেন, “আউশগ্রামে আইসি-র নেতৃত্বে পুলিশ টিম খুব ভালো কাজ করছে। অনুষ্ঠানগুলি সুন্দর ভাবে ফিরে এসেছে— এটা আমাদের সকলের জন্যই আনন্দের। পুলিশ মানুষের পাশে সব সময় থাকবে, আপনারাও পাশে থাকুন।” অনুষ্ঠান শেষে পুলিশ সুপার এবং অন্য আধিকারিকেরা ঘুরে দেখেন থানা চত্বর। শ্মশান কালী মন্দির এবং ছোটদের আঁকা চিত্র প্রদর্শনীও ঘুরে দেখেন তাঁরা।