কয়েক মাস আগে একটি ওয়েবসাইটে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট বানিয়ে ট্রেনের টিকিট কাটার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন কুলটির এক যুবক। এ ছাড়া ট্রেনে ল্যাপটপ, মোবাইল খোওয়া যাওয়ার অভিযোগও প্রায়ই মেলে।— এই সমস্ত ঘটনা রুখতে ও অপরাধীদের দ্রুত নাগাল পেতে পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনে তৈরি হবে ‘সাইবার সেল’। রেল কর্তাদের দাবি, পূর্ব রেলের চারটি ডিভিশনের মধ্যে আসানসোলেই প্রথম এমন পদক্ষেপ করা হল।
ডিভিশনের সিনিয়র কমান্ড্যান্ট অচ্যুতানন্দ ঝা জানান, আগামী দু’মাসের মধ্যেই এই দফতরটি কাজ শুরু করবে। তিনি জানান, সাইবার সেল তৈরির জন্য দিল্লিতে আরপিএফের ডিজি-র কাছে প্রথমে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়। তার পরে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় অনুমতিও মিলেছে। রেল কর্তারা জানান, প্রাথমিক ভাবে এই ‘সেলে’ ১০ জন আধিকারিক ও কর্মীকে নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁদের সকলকেই দিল্লির ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ক্রিমিনলজি অ্যান্ড ফরেন্সিক’ প্রতিষ্ঠানে তিন সপ্তাহের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জানান অচ্যুতানন্দবাবু। ইতিমধ্যে সেলটি তৈরির জন্য আসানসোলে প্রয়োজনীয় অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি বসানোর কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে বলে রেল সূত্রে খবর।
তবে কেন এমন সেল তৈরি করতে হল? রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে এই ডিভশনের বিভিন্ন জায়গায় পরপর বেশ কয়েকটি অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। তা রুখতে এবং যাত্রী সুরক্ষা নিশ্ছিদ্র করতেই এমন উদ্যোগ। অচ্যুতানন্দবাবু জানান, রেল সফরে প্রায়ই মোবাইল, ল্যাপটপ খোওয়া যাওয়া, এমনকী চুরির অভিযোগ ওঠে। সেগুলি উদ্ধার করতে এত দিন হিমসিম খেতে হতো।
কিন্তু ‘সাইবার সেল’ তৈরি হলে তদন্তকারীরা আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে খুব সহজেই খোয়া যাওয়া জিনিসগুলির সন্ধান পাবেন বলে রেল কর্তাদের আশা। তা ছাড়া রেলের অনলাইন টিকিট বুকিং-এর ক্ষেত্রে প্রতারণার অভিযোগ উঠলে, তা-ও রোখা যাবে বলে আশা কর্তাদের। এ ছাড়া, অনেক সময়েই দেখা যায়, রেলে চাকরি দেওয়ার নাম করে বেকার যুবক-যুবতীদের প্রতারিত হচ্ছে। সম্প্রতি আসানসোল ডিভিশনে এমন বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। সেই সব ঘটনার তদন্তকারীদের আশা, সাইবার সেল তৈরি হলে প্রতারকদের খুঁজে বের করাও অনেক সহজ হবে। মহিলা যাত্রীদের উত্ত্যক্ত করায় অভিযুক্তদেরও নাগাল পাওয়া অনেকটা সহজ হবে বলে আশা।
রেলের এই উদ্যোগে খুশি সাধারণ যাত্রীরাও। এক নিত্যযাত্রী বলেন, ‘‘এর ফলে আমাদের সুরক্ষা আরও আঁটোসাঁটো হলে ভাল।’’