Mamata at Bardhaman

নেই বাস-ট্রেন, ভোগান্তি চরমে

এ দিন বর্ধমান শহরের গোদা মাঠে মুখ্যমন্ত্রীর সভা থাকায় বুধবার রাতেই বিভিন্ন রুট থেকে বাস তুলে নেওয়া হয়। সকালে নবাবহাট এবং আলিশা বাসস্ট্যান্ডে হাতেগোনা কয়েকটি বাস ছিল।

Advertisement

সুপ্রকাশ চৌধুরী

বর্ধমান, কালনা শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৯:৪০
Share:

বর্ধমানের জিটি রোডে ভিড় নিয়ন্ত্রণ। নিজস্ব চিত্র

বাতিল হয়েছে বহু ট্রেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরের কারণে বৃহস্পতিবার রাস্তায় বাস কার্যত ছিলই না। যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ জারি ছিল। এ সবের অভিঘাতে দিনভর ভোগান্তি পোহাতে হল যাত্রীদের। যে কয়েকটি ট্রেন চলেছে, তাতে পা ফেলার জায়গা ছিল না। বর্ধমান স্টেশনের কাছে পুরনো উড়ালপুল ভাঙার কারণে ২৬ জানুয়ারি থেকে রোজই বাতিল হচ্ছে অনেক ট্রেন। ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভোগান্তি চলবে বলে আশঙ্কা।

Advertisement

এ দিন বর্ধমান শহরের গোদা মাঠে মুখ্যমন্ত্রীর সভা থাকায় বুধবার রাতেই বিভিন্ন রুট থেকে বাস তুলে নেওয়া হয়। সকালে নবাবহাট এবং আলিশা বাসস্ট্যান্ডে হাতেগোনা কয়েকটি বাস ছিল। সকালে স্ট্যান্ডে আসা যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছতে কার্যত হিমশিম খেতে হয়। জিটি রোডের বিভিন্ন মোড়ে যান নিয়ন্ত্রণ করা হয়। চলতে দেওয়া হয়নি টোটো বা অন্য যানবাহন। জেলা পরিবহণ দফতরের আধিকারিক (আরটিও) অনুপম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রাস্তায় কিছু বাস ছিল। সব বাস তুলে নেওয়া হয়নি। সরকারি বাস চলেছে।’’

সকালে নবাবহাট বাসস্ট্যান্ডে আসেন গুসকরার বাসিন্দা ইমরান শেখ। বর্ধমান স্টেশনে দূরপাল্লার ট্রেন ধরতে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। টোটো না পেয়ে বড় ব্যাগ নিয়ে হেঁটে স্টেশনে যান তিনি। গলসি থেকে বর্ধমান মেডিক্যালে ডাক্তার দেখাতে আসা শিবানী ঘোষকে ফিরে যেতে হয় গাড়ি না মেলায়। রেশমি সর্দার, ললিত দাসের মতো অনেক যাত্রীই বলেন, ‘‘তেলিপুকুর থেকে বাঁকুড়া মোড় বা রায়না খণ্ডঘোষের দিকে যাওয়ার জন্য টোটো ছাড়া গতি ছিল না। কিন্তু চালকেরা ১৫০ টাকার নীচে যেতে রাজি হননি।’’ শিখা সিংহ নামে এক যাত্রী জানান, আরামবাগ যাওয়ার বাসের জন্য আলিশা স্ট্যান্ডে ঘণ্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে তাঁকে। ট্রেনের নিত্যযাত্রী অভিষেক মণ্ডল বলেন, ‘‘সকালে হুল এক্সপ্রেস-সহ একাধিক লোকাল ছিল না। ছিল না বাস বা অন্য যান। স্টেশনে ব্যাপক ভিড় হয়। ব্ল্যাক ডায়মন্ড আসে। ট্রেনে পা রাখার জায়গা মেলেনি।’’ শহরবাসীর একাংশ প্রশ্ন তোলেন, মুখ্যমন্ত্রী হেলিকপ্টারে এসেছিলেন। তবে রাস্তায় এত কড়াকড়ি কেন? সভায় ভিড় টানার জন্য প্রচুর বাস তুলে নেওয়া নিয়েও সরব হন তাঁরা।

Advertisement

কালনা নতুন বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন একশোর বেশি বাস চলে। মুখ্যমন্ত্রীর সভায় যাওয়ার জন্য প্রত্যেক ব্লক থেকে ২০টি করে বাস তুলে নেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। কয়েকটি বাস চলেছে মেমারি এবং বর্ধমান রুটে। কালনা শহরের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘পূর্বস্থলী ১ ব্লকের এক স্কুলে শিক্ষকতা করি। বাস না মেলায় দু’বার অটো এবং একবার টোটোয় চেপে নাদনঘাট মোড় পর্যন্ত গিয়েছিলাম। সেখান থেকে এক জনের মোটরবাইকে স্কুলে যাই।’’

বোলপুর মহকুমা বাসমালিক সমিতির সম্পাদক সুনীলকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘বোলপুর স্ট্যান্ড থেকে কম-বেশি ১৮০টি বাস চলে। মুখ্যমন্ত্রীর সভার জন্য ১৬০টি তুলে নেওয়া হয়েছে।’’ বীরভূম জেলা বাস মালিক সমিতির রামপুরহাট শাখার সম্পাদক জামারুল ইসলাম বলেন, ‘‘রামপুরহাট মহকুমা থেকে ৯০টি বাস মুখ্যমন্ত্রীর সভার জন্য নেওয়া হয়েছে। সিউড়ি স্ট্যান্ড থেকে ৫০টির বেশিবাস গিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন