বিয়েবাড়িতে গলায় খাবার আটকে মৃত্যু বৃদ্ধের

বিয়েবাড়িতে নেমন্তন্ন খেতে গিয়েছিলেন ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধ। সেখানেই গলায় মাংসের টুকরো আটকে মৃত্যু হয় তাঁর। বুধবার মঙ্গলকোটের গোতিষ্ঠা গ্রামের ঘটনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আউশগ্রাম শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৭ ০২:১৬
Share:

বিয়েবাড়িতে নেমন্তন্ন খেতে গিয়েছিলেন ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধ। সেখানেই গলায় মাংসের টুকরো আটকে মৃত্যু হয় তাঁর। বুধবার মঙ্গলকোটের গোতিষ্ঠা গ্রামের ঘটনা।

Advertisement

স্থানীয় এক বাসিন্দার ছেলের বিয়ে উপলক্ষে এ দিন দুপুরে নিমন্ত্রিতদের খাওয়ানো হচ্ছিল। খেতে বসে গলায় মাংসের টুকরো আটকে যায় স্থানীয় বাসিন্দা জিলু শেখের (৬৫)। সেখানেই মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয়।

ঘটনার সময়ে ওই বিয়েবাড়িতেই ছিলেন গোতিষ্ঠা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শরকত মল্লিক। তিনি বলেন, ‘‘উনি খেতে খেতে বেদম কাশতে শুরু করেন। কথা বলতে পারছিলেন না। চোখ ঠিকরে বেরিয়ে আসছিল যেন। ছটফট করছিলেন।’’
তখনই অনেকে জিলুর পিঠে-ঘাড়ে চাপ দিয়ে মাংসের টুকরো বার করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কাজ হয়নি।
ডাক্তার এসে জিলুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

Advertisement

খাওয়ার সময় খাবার ঢুকে শ্বাস আটকে এমন মৃত্যু আগেও হয়েছে। সম্প্রতি বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে গলায় বাদাম আটকে মারা গিয়েছে বছর চারেকের আয়ুষ অধিকারী। একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এ ধরনের ঘটনাকে বলে ‘কাফে করোনারি সিনড্রোম’।

এমন পরিস্থিতিতে গলায় আটকে যাওয়া জিনিসটি বার করতে পারলেই প্রাণ বাঁচানো যেতে পারে। যে পদ্ধতিতে তা করা যায় তার নাম ‘হাইমলিখ কৌশল’ (মার্কিন থোরাসিক সার্জেন হেনরি হাইমলিখ-এর নামে)।
যাঁর গলায় খাবার আটকেছে, তাঁর নাভিমণ্ডলে চাপ দিলে ফুসফুসের হাওয়া শ্বাসনালিতে ঢোকা খাবার বার করে দেয়। একা থাকলে নিজের পেটে চেয়ার গোছের কিছু চেপে ধরেও এই চেষ্টা করা যেতে পারে। তবে সবটাই করতে হবে মিনিট চারেকের মধ্যে। কারণ, শ্বাসনালির মুখ আটকে গেলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন ঢোকে না। তাতে মৃত্যু অনিবার্য।

বেশ কিছু দিন ধরে বাঁকুড়ার স্কুলে স্কুলে ঘুরে ‘হাইমলিখ কৌশল’ শেখাচ্ছেন জেলার রাধানগর বোর্ড প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক সৌম্য সেনগুপ্ত। মঙ্গলকোটের ঘটনা শুনে সৌম্যবাবু বলেন, ‘‘এ জন্যই হাইমলিখ কৌশল সাধারণ মানুষের জানা প্রয়োজন। ভদ্রলোক মিনিট পাঁচেক বেঁচেছিলেন। তার মধ্যে কেউ মাংসের টুকরোটা বার করে ফেলতে পারলে, প্রাণটা বেঁচে যেত।’’

মৃতের ভাইপো আনারুল শেখ বলেন, ‘‘জানতাম না, কী উপায়ে কাকাকে বাঁচাব। অনেক চেষ্টা করেছিলাম। লাভ হল না!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন