কাউন্সিলরের শংসাপত্রে পেনশন মৃতের অ্যাকাউন্টে

তিনি মৃত। কিন্তু তৃণমূল কাউন্সিলরের শংসাপত্রে দিব্যি বেঁচে রয়েছেন। আসানসোল পুরসভার এক অবসরপ্রাপ্ত সাফাইকর্মীর ক্ষেত্রে এমনই ঘটনা ঘটেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৬ ০২:১০
Share:

সেই শংসাপত্র। নিজস্ব চিত্র।

তিনি মৃত। কিন্তু তৃণমূল কাউন্সিলরের শংসাপত্রে দিব্যি বেঁচে রয়েছেন। আসানসোল পুরসভার এক অবসরপ্রাপ্ত সাফাইকর্মীর ক্ষেত্রে এমনই ঘটনা ঘটেছে। শুধু তাই নয়, বছরের পর বছর ‘মৃত’ কর্মীর নামে থাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে পেনশনের টাকাও। সম্প্রতি বিভাগীয় তদন্তে এমনই বেনিয়মের অভিযোগের প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে বলে খবর।

Advertisement

ঘটনাটা কী? পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সাফাইকর্মী দর্শন হেলা বছর সাতেক আগে অবসর নেন। ২০১১ সালের ৩ ডিসেম্বর মৃত্যু হয় তাঁর। কিন্তু এ ক্ষেত্রে পরিবারের লোকজন দর্শনবাবুর জীবিত থাকার ভুয়ো শংসাপত্র জমা দেন আসানসোলের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে। ফলে, মাস গেলে নিয়মিত অ্যাকাউন্টে পেনশনের ছ’হাজার টাকা করে মিলত। নিয়মিত সেই টাকা তোলাও হয়েছে বলে তদন্তে দাবি করা হয়েছে। ২০১৪ সালে মারা যান দর্শনবাবুর স্ত্রী কেওলাদেবী। নিয়ম মতো কোনও সরকারি কর্মী মারা গেলে তাঁর স্ত্রীর অর্ধেক পেনশন পাওয়ার কথা। এ বারও পুর কর্তৃপক্ষকে অন্ধকারে রাখা হয় বলে অভিযোগ। ফলে, মাস গেলে পেনশনের পুরো টাকা অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে।

বিষয়টি প্রথম সামনে আসে ২৯ ফেব্রুয়ারি। দর্শনবাবুর এক আত্মীয় ব্যাঙ্কে টাকা তুলতে গেলে তাঁকে জানানো হয়, পেনশন প্রাপককে সশরীরে আসতে হবে, না হলে টাকা মিলবে না। ব্যাঙ্কের তরফে পুর কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়, গত পাঁচ বছরে এক বারও ব্যাঙ্কে আসেননি দর্শনবাবু। এর পরেই নড়েচড়ে বসেন পুর কর্তৃপক্ষ। শুরু হয় তদন্ত। মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘আমরা বেনিয়মের প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Advertisement

মৃত ব্যক্তিকে জীবিত শংসাপত্র দিয়েছিলেন পুরসভার ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গুরুদাস চট্টোপাধ্যায়। তবে তাঁর দাবি, ‘‘এক বৃদ্ধ দম্পতিকে আমার সামনে দাঁড় করিয়ে ওই শংসাপত্র লিখিয়ে নেওয়া হয়। ওঁরা যে আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দা নন, বুঝতেই পারিনি।’’ কিন্তু শংসাপত্রে তো দর্শনবাবু ও কেওলাদেবীর ছবি সাঁটানো রয়েছে? কাউন্সিলর এ প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি মেয়রও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন