বিধায়কের সামনে নালিশ জানাচ্ছেন গ্রামবাসী। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র।
অনুন্নয়নের অভিযোগ তুলে বিধায়কের সামনে ক্ষোভ জানালেন গ্রামবাসী। ‘বঙ্গধ্বনি’ যাত্রায় গিয়ে বর্ধমান ২ ব্লকের বন্ডুল ২ পঞ্চায়েতের করোরি গ্রামে শুক্রবার বিকেলে এই বিক্ষোভের মুখে পড়েন বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক নিশীথ মালিক। লাগোয়া সড্ড্যা গ্রামে বাড়ি ব্লক তৃণমূল সভাপতি শ্যামল দত্তের। তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় গ্রামবাসীর একাংশকে। বিধায়ককে পাঁচ বছর দেখা যায়নি, সে অভিযোগও তোলেন তাঁরা।
পরে নিশীথবাবুর দাবি, ‘‘বাড়ি দেওয়া থেকে রাস্তাঘাট তৈরি নিয়ে নানা অনিয়মের কথা জানিয়েছেন গ্রামবাসী। আমার বিরুদ্ধে ক্ষোভ নেই। ক্ষোভ পঞ্চায়েত প্রধান ও ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে। আমরা গ্রামবাসীর অভিযোগ মন দিয়ে শুনেছি।’’ ব্লক সভাপতির পাল্টা দাবি, ‘‘আমার পাশের গ্রামের মানুষ আমার বিরুদ্ধে কি ক্ষোভ দেখাতে পারেন? বিধায়ককে কেন দেখা যায়নি, সে নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন শুনেছি। সম্পূর্ণ রিপোর্ট না নিয়ে কোনও কিছু বলতে পারব না।’’ তৃণমূল সূত্রের দাবি, এই ব্লকে বিধায়ক ও ব্লক সভাপতির গোষ্ঠীর ‘দ্বন্দ্ব’ নতুন নয়। কয়েকমাস আগে কে ব্লক সভাপতি, তা নিয়ে আকচাআকচি শুরু হয়েছিল। ফ্লেক্সও পড়েছিল। রাজ্য নেতৃত্বকে হস্তক্ষেপ করতে হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চাঁদপাল পুকুর ও শৈদেগড়ের পুকুরের মাঝের রাস্তা কয়েকদশক ধরে খারাপ। সেখান দিয়ে গ্রামের দত্তপাড়ায় যাতায়াত করতে হয়। সেখানকার বাসিন্দারা বেহাল রাস্তা নিয়ে ক্ষোভ জানান এ দিন। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘পাড়ার সবাই তৃণমূল করেন। অথচ, রাস্তা সংস্কার হয় না। বাংলা আবাস যোজনার ঘর মেলে না। উন্নয়ন হলে তবেই এই সরকারের পাশে থাকব।’’ সেখানেই কয়েকজন বাসিন্দাকে ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানাতে দেখা যায়। এর পরে গ্রামের বারোয়ারিতলায় পৌঁছলে বিধায়ককে কয়েকজন প্রশ্ন করেন, গ্রামের জন্য কী করেছেন? ভোটের পরে কত বার এসেছেন? কেন এত দিন দেখা যায়নি?
বর্ধমান ২ ব্লকের সিপিএমের এরিয়া কমিটির সদস্য কল্যাণ হাজরার দাবি, ‘‘ওই গ্রামকে মডেল করার কথা বলা হয়েছিল। কোনও কাজ হয়নি। বিধায়ককে এত দিন মানুষ দেখেননি। তাই স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষোভ দেখিয়েছেন।’’ পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের শিশির রক্ষিতের দাবি, ‘‘ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কেউ কেউ ক্ষোভ দেখিয়েছেন। দত্তপাড়ার রাস্তাটি করার জন্য ব্লক সভাপতি আমাকে বলেছেন। একশো দিনের কাজে রাস্তা সংস্কার করে দেওয়া হবে বলেছি। সেই সময়টুকু তো দিতে হবে।’’