জেলায় বাড়ছে ডেঙ্গি, আবর্জনা নিয়ে ক্ষোভ

একাধিক বাড়িতেও নানা ভাবে জমা জল দেখা গিয়েছে। বর্ধমান, কাটোয়া, কালনা শহর থেকে জেলার গ্রামীণ এলাকাতেও একই ছবি। বাসিন্দাদেরও দাবি, মশার দৌরাত্ম্যে কোথাও শান্তিতে বসার উপায় নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৪২
Share:

প্রতীকী চিত্র।

রাস্তার দু’পাশে ঘন আগাছা। বিভিন্ন পুকুরের কোনওটি মজে গিয়েছে, কোনওটি পানায় ভর্তি। নর্দমাগুলিও ততোধিক নোংরা। একাধিক বাড়িতেও নানা ভাবে জমা জল দেখা গিয়েছে। বর্ধমান, কাটোয়া, কালনা শহর থেকে জেলার গ্রামীণ এলাকাতেও একই ছবি। বাসিন্দাদেরও দাবি, মশার দৌরাত্ম্যে কোথাও শান্তিতে বসার উপায় নেই।

Advertisement

পুজোর আগে পর্যন্ত পূর্ব বর্ধমান জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের প্রভাব কম ছিল। পুজোর পরে তা বেড়েছে দাবি, প্রশাসনের একাংশের। বুধবার বিকেল পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গি-আক্রান্তের সংখ্যা ২৪৬ জন। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তাদের কথায়, ‘‘গত বছরও পুজোর পর থেকে ডেঙ্গি-আক্রান্ত বাড়তে বাড়তে ৩২০ হয়েছিল। এ বছর যে হারে বাড়ছে তাতে গত বছরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’’ স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব অনুযায়ী, ২৪৬ জনের মধ্যে ৭২ জন আক্রান্ত ‘বহিরাগত’। এ ছাড়া, সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গি আক্রান্ত মিলেছে বর্ধমান শহর (২০ জন), তার পরেই রয়েছে কাটোয়া ১ ব্লক (১৮ জন)।

জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষজনের অভিযোগ, দিনের বেলাতেও মশার হামলা থেকে বাঁচতে দরজা-জানলা বন্ধ রাখতে হচ্ছে। কোথাও কোথাও মশারি টাঙিয়ে বসে থাকতেও দেখা গিয়েছে বাসিন্দাদের। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারাও মনে করছেন, মশার হাত থেকে বাঁচতে এ ছাড়া আর উপায় নেই। তাঁদের দাবি, শহর-গ্রাম চারিদিক অপরিচ্ছন্ন থাকলে ‘কামান দেগে’ও কী আর মশার বংশ ধ্বংস করা সম্ভব! ফলে, মশা মারার ধূপ, তেল, স্প্রে করেও রেহাই মিলছে না মানুষজনের। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, পুরসভা ও ব্লক প্রশাসনের ঘুম না ভাঙলে মশার উপদ্রব ঠেকানো কার্যত অসম্ভব।

Advertisement

প্রতিরোধের দাওয়াই

•  জল জমা থাকতে দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে পুরসভা বা পঞ্চায়েতের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
• অ্যানোফিলিস ও কিউলেক্স মশা জমা জলে ডিম পাড়ে। আশপাশে থাকা ফুলের টব, ডাবের খোলা, পরিত্যক্ত টায়ারে জল যাতে না জমে লক্ষ্য রাখতে হবে।
• জমে থাকা ইট, বালি-সিমেন্টের স্তূপে মশা বসবাস করে। তাই এলাকার আশপাশে একেবারেই এ সব জমে থাকতে দেওয়া যাবে না। একান্তই রাখতে হলে নিয়মিত কীটনাশক ও মশা মারার স্প্রে করতে হবে।
• জোর দিতে হবে আগাছা পরিষ্কারে।

বর্ধমান শহরের বড় বড় নর্দমা তো বটেই সাবজোলা খালও অপরিষ্কার থাকায় মশার উৎপাত দিন দিন বেড়েই চলেছে। মাঝেমধ্যে মশা মারার ধোঁয়া বা কীটনাশক ছড়ালেও ফল মেলে না। শহরবাসীর ক্ষোভ, “পুরকর্তারা ঘুমিয়ে থাকলে মশার উপদ্রব বাড়বে, ডেঙ্গিও হবে।’’ যদিও পুরসভার তরফে এ নিয়ে কেউই কিছু বলতে চাননি।

অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন ও স্বাস্থ্য) রজত নন্দা বলেন, “আগামী সোমবার জেলার পুরসভা, পঞ্চায়েত-সহ সমস্ত বিভাগের আধিকারিকদের নিয়ে মশা-সংক্রান্ত একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে রূপরেখা তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন