Dhaki

দু’বছরের খরা কাটিয়ে চওড়া হাসি ঢাকিদের

ঢাকিরা জানাচ্ছেন, বছরভর নানা পুজো থেকে ডাক আসে ঠিকই। কিন্তু শারদ-মরসুমেই তাঁদের মূল রোজগার। কারণ, এই পুজোয় বায়না মেলে কমপক্ষে চার দিনের জন্য।

Advertisement

বিপ্লব ভট্টাচার্য

কাঁকসা শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৯:০৫
Share:

কয়েক দিন পরেই যেতে হবে প্যান্ডেলে। তার আগে ঢাকের অবস্থা কেমন তা দেখে নিচ্ছেন এক ঢাকি। কাঁকসায়। নিজস্ব চিত্র

গত দু’বছরে করোনা পরিস্থিতি তাঁদের জীবিকায় থাবা বসিয়েছিল। তবে এ বছর করোনা থাকলেও, সামাজিক পরিস্থিতি কিছুটা ছন্দে ফিরেছে। এই অবস্থায় ফের আশার আলো দেখছেন পশ্চিম বর্ধমানের বিভিন্ন প্রান্তের ঢাকিরা।

Advertisement

ঢাকিরা জানাচ্ছেন, বছরভর নানা পুজো থেকে ডাক আসে ঠিকই। কিন্তু শারদ-মরসুমেই তাঁদের মূল রোজগার। কারণ, এই পুজোয় বায়না মেলে কমপক্ষে চার দিনের জন্য। তবে পশ্চিম বর্ধমান জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় বহু ঢাকি লোকশিল্পী হিসেবে ভাতা পেয়ে থাকেন। নতুন করে অনেকে আবেদন করছেন। তাঁদের আবেদনপত্রগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

দুর্গাপুরের আমরাই গ্রামে প্রায় ২০ জন ঢাকি রয়েছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, গত দু’বছরে করোনা পরিস্থিতির কারণে বহু জায়গায় পুজো হয়েছে কোনও রকমে। ফলে, মাত্র চার-পাঁচ জন ঢাকি বায়না পেয়েছিলেন। তা-ও স্বাভাবিক পরিস্থিতির তুলনায় অনেকটাই কম টাকায় কাজ করতে হয়েছে। ওই গ্রামের ঢাকি অশোক বাদ্যকর জানাচ্ছেন, প্রায় ৪০ বছর ধরে ঢাক বাজাচ্ছেন। বর্তমানে কয়েক জনকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। গত দু’বছরে কেউ-কেউ মাত্র দু’-তিন হাজার টাকার বায়নাতেও ঢাক বাজাতে গিয়েছিলেন। বাজেট কমে যাওয়ায়, যে পুজো উদ্যোক্তারা চার-পাঁচ জন করে ঢাকির বায়না দিতেন, তাঁরা মাত্র এক জন করে দিয়েছিলেন।

Advertisement

এই দু’বছর কী ভাবে কেটেছে তাহলে? অশোক জানান, তাঁর নিজস্ব ‘ব্যান্ড পার্টি’ রয়েছে। কিন্তু দু’বছর সেখানেও কাজ পাননি তেমন। অনেকেই দিনমজুরি, রাজমিস্ত্রির কাজ করেছেন। কেউ বা কৃষি শ্রমিকের কাজ করেছেন। সমস্যার কথা জানাচ্ছেন কাঁকসার ঢাকি আকাশ রুইদাস। তিনি বলেন, “দুর্গা পুজো ছাড়া সে ভাবে ডাক আসে না। বছরের অন্য সময় দিনমজুরি করি। অনেকে সংসার চালাতে বিভিন্ন পেশা বেছে নিচ্ছেন।”

তবে এ বার ছবিটা কিছুটা হলেও বদলেছে, জানাচ্ছেন দুর্গাপুর, কাঁকসা-সহ জেলার নানা প্রান্তের ঢাকিরা। প্রায় সবাই ঢাক বাজানোর ডাক পেয়েছেন। বরাত মিলেছে আট-দশ হাজার টাকার। রামদাস বাদ্যকর, কার্তিক বাদ্যকরের মতো কয়েক জন ঢাকি বলেন, “এ বার হাতে প্রচুর কাজ আছে। আশা করি কোনও সমস্যা হবে না।”

ঢাকিদের মুখে হাসি চওড়া হওয়ায়, এ বার ঢাকের তালে পুজো কাটবে ভালই, আশা করছেন উদ্যোক্তারাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন