Awas Yojana

‘মানুষ পেটাবে, এই ভয়ে পালাচ্ছে’! ‘আবাস-দুর্নীতি’ নিয়ে কটাক্ষ দিলীপের, পাল্টা তৃণমূলও

আবাস যোজনায় শাসকদলের নেতারা ‘কাটমানি’ খেয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন দিলীপ। বলেন, ‘‘যাঁরা প্রকৃত দুঃস্থ, তাঁদের নাম কেটে দেওয়া হয়েছে। হয় তৃণমূল করতে হবে, নয়তো ২০-২৫ হাজার টাকা দিতে হবে!’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২২ ১৮:১২
Share:

বর্ধমানে দলীয় কার্যালয় উদ্বোধন কর্মসূচিতে যান দিলীপ। নিজস্ব ছবি।

যাঁরা প্রকৃত গরিব, তাঁদেরই বাদ দেওয়া হয়েছে! এ বার মানুষই তৃণমূল নেতাদের লাইটপোস্টে বেঁধে পেটাবে। রাস্তায় বেরোলে জামাকাপড় খুলে নেবে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ‘দুর্নীতি’র অভিযোগ তুলে শাসকদলকে হুঁশিয়ারি দিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বর্ধমানে গিয়ে তিনি বললেন, ‘‘কেন্দ্রের বরাদ্দ টাকা লুট করেছেন তৃণমূল নেতারা। মানুষ তাঁদের ছেড়ে দেবেন না। মার খেতে হবে ভেবেই এখন ভয়ে পদত্যাগ করতে হচ্ছে পঞ্চায়েত নেতাদের।’’

Advertisement

ঘটনাচক্রে, শনিবারই মুর্শিদাবাদের তৃণমূল পরিচালিত মালিহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান-সহ ১৭ জন সদস্য গণইস্তফা দেন। তা নিয়ে কটাক্ষ করে রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ বলেন, ‘‘পাবলিকের মারের ভয়ে এখন পালাচ্ছে! কাউকে ছাড়া হবে না। এই পঞ্চায়েতের লোকেদের নিম গাছে বেঁধে রেখে দেবেন। খেজুর গাছে বেঁধে কলার ধরে হিসেব চাইবেন। প্যান্ট খুলে দেবেন। কারণ ওঁরা যে টাকা চুরি করে বাড়ি করেছেন, সেটা আপনার টাকা। যে গাড়ি কিনছেন, সেইটাও আপনার টাকায়।’’ বিজেপি নেতার এই মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূলও। শাসকদলের বক্তব্য, মানুষকে তাতানোর চেষ্টা করছেন দিলীপ। এতে কোনও কাজ হবে না।

রবিবার ‘মন কি বাত’ ও ‘সুশাসন দিবস’ উপলক্ষে বর্ধমান উত্তর বিধানসভার হীরাগাছি কুলারি গ্রামে যান দিলীপ ঘোষ। স্থানীয় বিজেপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তিনি ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান দেখেন। তার পর ওই গ্রামেই একটি দলীয় কার্যালয় উদ্বোধন করেন দিলীপ। এর পর কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তৃতা করতে গিয়ে বিজেপি নেতা বলেন, ‘‘বাংলায় আমরা সুশাসন চাই। উন্নয়ন চাই। কেন্দ্র সরকার হাজার কোটি টাকা পাঠাচ্ছে। কিন্তু সব টাকা লুট হয়ে যাচ্ছে। একশো দিনের কাজ থেকে আবাস যোজনা সবেতেই লুঠ হয়েছে। আমরা সব বিডিও অফিস ঘেরাও করছি। ওটা ভূতের বাসা! আবাস যোজনার নাম পাল্টে দেওয়া হয়েছে। যারা লুঠ করেছে, তারা পালাতে চাইছে। জনতার দরবারে আসতে হবে। হিসাব দিতে হবে।’’

Advertisement

আবাস যোজনায় শাসকদলের নেতারা ‘কাটমানি’ খেয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন দিলীপ। বলেন, ‘‘যাঁরা প্রকৃত দুঃস্থ, তাঁদের নাম কেটে দেওয়া হয়েছে। হয় তৃণমূল করতে হবে, নয়তো ২০-২৫ হাজার টাকা দিতে হবে। যাঁরা টাকা দেননি, তাঁদের নাম কেটে দেওয়া হয়েছে। আমার এলাকায় একটি গ্রামে ৪৫০টি নাম কেটে দেওয়া হয়েছে। সেই লিস্ট আমরা দিল্লিতে পাঠিয়েছি। তার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

দুয়ারে পঞ্চায়েত নির্বাচন। সেই ভোট থেকেই বাংলায় পরিবর্তন আসবে বলে দাবি করেন দিলীপ। বলেন, ‘‘পশ্চিমবাংলায় পরিবর্তন পঞ্চায়েত থেকেই হবে। মোদীজির পাঠানো হাজার হাজার কোটি টাকায় উন্নয়ন হবে। আপনার গ্রামের রাস্তা হবে। জল-বিদ্যুৎ আসবে। স্কুলে মাস্টার, হাসপাতালে ডাক্তার আসবে। না হলে আবার পাঁচ বছরে এ রকম পেটে গামছা দিয়ে ঘুরতে হবে।’’

দিলীপের মন্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূল মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন, ‘‘ভুল আর মিথ্যে কথা বলা ওঁর কাজ। প্রতি দিনই উনি এই ধরনের কথা বলে বাজার গরম করতে চাইছেন। আসলে বাংলার মানুষ বিজেপির সঙ্গে নেই। তাই এ সব বলে তাতানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু এতে কোনও কোনও কাজ হবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন