খালের গতি আটকে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে এখানেই। —নিজস্ব চিত্র।
বড় খাল (জোড়) জবরদখলের ফলে ভেঙে পড়তে বসেছে শহরের নিকাশি ব্যবস্থা। আবর্জনা মিশ্রিত জল ঢুকে পড়ছে জোড় লাগোয়া বাড়িঘরে। সালানপুরের রূপনারায়ণপুরে এমন অভিযোগে সরব হয়েছেন বাসিন্দারা। জোড় থেকে দখলদার উচ্ছেদের দাবিতে ইতিমধ্যে কয়েক বার পঞ্চায়েত অফিসে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন তাঁরা।
বহু বছর ধরেই রূপনারায়ণপুর ও আশপাশের নানা এলাকা দিয়ে বয়ে চলেছে এই জোড়। ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে হলুদকানালি গ্রাম পেরিয়ে রূপনারায়ণপুরে ঢুকেছে সেটি। তার পরে দেশবন্ধু পার্ক, হিন্দুস্তান কেব্লস আবাসন অঞ্চল, অরবিন্দ নগর, কল্যাণগ্রাম ও জিত্পুর-উত্তরামপুর হয়ে অজয়ে গিয়ে মিশেছে সেটি।
শহরের বাসিন্দারা জানান, বিভিন্ন এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়ার সময়ে এই জোড়ের সঙ্গে মেশে সেখানকার আবর্জনা মিশ্রিত জল। সে কারণে শহরের নিকাশি ব্যবস্থায় জোড়টি বড় ভূমিকা নেয়। অভিযোগ, বছর দুয়েক ধরে জোড়ের গতিপথ আটকানো হচ্ছে। দু’দিকে পাঁচিল তুলে জবরদখল করা হচ্ছে জোড়ের জায়গা।
এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, রূপনারায়ণপুরে নিউ মার্কেটের পিছনে পশ্চিম দেশবন্ধু পার্ক এলাকায় জোড়ের বেশ কিছুটা অংশে পাঁচিল তোলা হয়েছে। সেখানে মাটি ভরাট করে দালানবাড়ি তোলা হচ্ছে। এর ফলে সেখানে জোড়টি সঙ্কুচিত হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেন, গত বর্ষায় জোড়ের জল ঠিক মতো বইতে না পারায় আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছিল। জোড়ের উপরের একটি সেতুও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, জোড়ের জায়গা জবরদখলের ফলে সবচেয়ে করুণ দশা অরবিন্দ নগরের পর থেকে জিত্পুর-ডাঙালপাড়া অঞ্চলের। সামান্য বৃষ্টিতেই সেই অঞ্চল বানভাসি হয়ে যায়। পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দেড়েক আগে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে জোড়টির সংস্কার করা হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা আশা করেছিলেন, সমস্যা মিটল। কিন্তু এলাকার এক শ্রেণির বাসিন্দারা জোড়ের জায়গা জবরদখল করায় হাল ফেরেনি বলে অভিযোগ। তাঁদের দাবি, ফের জোড় সংস্কার করে দখলদার উচ্ছেদ করার ব্যবস্থা হোক।
সালানপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শ্যামল মজুমদার জানান, তিনি জোড়ের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলি পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, “দখলদারদের তিন মাসের মধ্যে অবৈধ নির্মান ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বর্ষার আগেই জোড়টি সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোনও ভাবেই যাতে এলাকা বানভাসি না হয়, তা দেখা হবে।” স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার কৃষক পরিবারগুলি ওই জোড়ের জল সেচের কাজে ব্যবহারের ব্যবস্থা করার জন্য পঞ্চায়েত সমিতির কাছে প্রস্তাব দিয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শ্যামলবাবুর আশ্বাস, এই প্রস্তাব বিবেচনা করা হবে।