দুই লকডাউনের মাঝে শুক্রবার এমনই হাল ছিল নিয়ামতপুর বাজারের। হল যানজটও। ছবি: পাপন চৌধুরী
দু’দিনের লকডাউনের মাঝে এক দিন ছাড় মিলেছে। তাই যাঁর যা কিছু দরকার, তা জোগাড় করতে শুক্রবার বেরিয়ে পড়েছেন মানুষজন। ফলে, এ দিন আসানসোল ও দুর্গাপুর মহকুমার বিভিন্ন বাজারে, দোকানে ভিড় ছিল অন্য দিনের চেয়ে তুলনামূলক বেশি। কার্যত উধাও হয়েছিল দূরত্ব-বিধি।
পুলিশ জানিয়েছে, সকাল থেকে বিভিন্ন বাজারে লাগাতার টহলদারি চলছে। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত বলেন, ‘‘অনিয়ম দেখলেই ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ।’’ বিধিভঙ্গের জন্য বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরে মোট ৯৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন ডিসি।
করোনা-সংক্রমণ রোধে আসানসোল মহকুমা প্রশাসন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বাজার-দোকান খোলা রাখার নির্দেশ আগেই জারি করেছে। তাই এ দিন দুপুরের পরে মহকুমার কোথাও দোকানপাট খোলা ছিল না। কিন্তু হাটে-বাজারে আসা বেশির ভাগ মানুষের মুখে ‘মাস্ক’ থাকলেও, দূরত্ব-বিধি মানা হয়নি বললেই চলে। দুর্গাপুরের বেনাচিতি বাজারের রাস্তাতেও এ দিন মোটরবাইক, গাড়ি, সাইকেল, ছোট ট্রাক, ভ্যানো— সব এক সঙ্গে যাতায়াত করেছে। যানজট হয়েছে জায়গায় জায়গায়। পুলিশকর্মীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেয়েছেন।
মোটরবাইকে চড়ে কেনাকাটা করতে বেরিয়েছিলেন ডিএসপি টাউনশিপের প্রসেনজিৎ সরকার। গুরুদ্বার রোডের মোড় পেরিয়ে কিছুটা এগোতেই তিনি আটকে পড়েন যানজটে। তখন বেলা সাড়ে ১১টা। প্রসেনজিৎবাবু বলেন, ‘‘করোনার সংক্রমণ রোধে গত সোমবার থেকে দুপুর ১টায় বাজার বন্ধ হচ্ছে। এর আগে দেখেছি, সকাল ১১টার পরে ভিড় কমতে থাকে। তাই এই সময়ে বাজারে এসেছি। কিন্তু এ দিন সাড়ে ১১টাতেও ভাল ভিড় ছিল।’’
একই চিত্র দুর্গাপুর স্টেশন বাজারেও। ক্রেতা সুবীর রায়, বিনয় রায়রা জানান, প্রথম দিকে দূরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন ভিড় পাতলা হওয়ার জন্য। কিন্তু পরিস্থিতি না বদলানোয় তাঁরাও ভিড়ের মধ্যেই কেনাকাটা করতে বাধ্য হন। তাঁদের দাবি, ‘‘আগে তো অনেকেই ‘মাস্ক’ না পরে চলে আসতেন। এখন অবশ্য সকলে ‘মাস্ক’ পরছেন। কিন্তু দূরত্ব-বিধি বজায় থাকছে না।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানদার বলেন, ‘‘প্রথম দিকে দূরত্ব-বিধি বজায় রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু ভিড়ের চাপে পরে তা হয়ে ওঠেনি।’’
এ দিকে, আজ, শনিবার ফের ‘লকডাউন’। তাই প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরোতে মাইকে করে নিষেধ করছে পুলিশ। জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার পুলিশের তৎপরতায় ‘লকডাউন’ সফল হয়েছে। একই ভাবে শনিবারেও পুলিশি তৎপরতা বহাল রাখা হবে।’’ বৃহস্পতিবার পুলিশের বিশেষ নজরদারি ছিল কুলটি ও সালানপুর থানা এলাকার সীমানা অঞ্চলেও। বরাকর, ডুবুরডিহি ও রূপনারায়ণপুর সীমানা দিয়ে যান চলাচল ও মানুষের যাতায়াত আজও বন্ধ রাখা হবে বলে জানিয়েছেন কমিশনারেটের ডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস। ‘লকডাউন’ চলাকালীন শহরের সর্বত্র ‘নাকা-চেকিং’ রাখা হবে বলে জানান তিনি।