রথকে ঘিরে পর্যটনের দাবি

দিগনগরের জগন্নাথ মন্দিরটি সুপ্রাচীন। পরে বর্ধমানের মহারাজা কীর্তিচন্দ এই মন্দিরটি জগন্নাথের স্বপ্নাদেশে তৈরি করেন বলে দাবি আঞ্চলিক ইতিহাস গবেষক সর্বজিৎ যশের।

Advertisement

প্রদীপ মুখোপাধ্যায়

আউশগ্রাম শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৭ ১৪:৪১
Share:

সাজ শুরু জগন্নাথের। নিজস্ব চিত্র

পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে যে সব আচার, এখানেও সে সবই পালিত হয়। জনশ্রুতি, ‘তীর্থযাত্রা’ সম্পূর্ণ করতে একই বছরে পুরী এবং আউশগ্রামের দিগনগর, দু’জায়গাতেই জগন্নাথ দর্শন করতে হবে। দিগনগরের এই মন্দির ও তার রথযাত্রা ঘিরে এমনই নানা কাহিনি প্রচলিত। বাসিন্দাদের দাবি, এই রথ ঘিরে পর্যটনকেন্দ্র তৈরি করুক প্রশাসন।

Advertisement

দিগনগরের জগন্নাথ মন্দিরটি সুপ্রাচীন। পরে বর্ধমানের মহারাজা কীর্তিচন্দ এই মন্দিরটি জগন্নাথের স্বপ্নাদেশে তৈরি করেন বলে দাবি আঞ্চলিক ইতিহাস গবেষক সর্বজিৎ যশের। মন্দিরের গায়ে এক সময় লেখা ছিল, ‘নীলাচল ফিরে দিগনগরে/ পারো যদি ঘোরো সম-বছরে/ হবে না ব্যর্থ, কভু সে তীর্থ/ প্রভুর এ বাণী রাজ গোচরে।’ বহুবার সংস্কারের জেরে সেই ছড়া এখন আর নেই। তবে তা আজও শোনা যায় বাসিন্দাদের মুখে মুখে। রাজবাড়ির তৈরি রথের মূল কাঠামোটিও এখন আর নেই। স্থানীয় বাসিন্দা অমিতাভ দে জানান, পুরনো কাঠামোর উপরে প্রায় ২৫ ফুটের কাঠের রথটি চাপানো হয়েছে। রথযাত্রার রীতিটিও বহু প্রাচীন। কী রকম? প্রথমে মূল মন্দির থেকে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে কদমখণ্ডীর কাছে মাসির বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। মাসির বাড়ি যাওয়ার আগে স্থানীয় ‘কামারমহল’ থেকে জগন্নাথ মন্দিরে ভোগযাত্রা হয়। উল্টো রথের আগের দিন মন্দির থেকে মাসির বাড়ি গিয়ে জগন্নাথের মানভঞ্জন করতে যান দেবী লক্ষ্মী, যা ‘লক্ষ্মীযাত্রা’ নামে পরিচিত। সেখানে বলরামকে আড়াল করে জগন্নাথের সাথে দেবীর শুভদৃষ্টি বিনিময় ও মালাবদল হয়। তারপরেই জগন্নাথকে মূল মন্দিরে ফিরে আসার আমন্ত্রণ জানান লক্ষ্মী।

বর্তমানে গোটা উৎসব পরিচালনা করে মন্দির উন্নয়ন কমিটি। কমিটির তরফে নবকুমার মণ্ডল জানান, “বহু ভক্ত বছরভর পুরী ঘুরে এই মন্দিরে আসেন। সব ধর্মের মানুষ রথযাত্রায় সামিল হন।’’ দিগনগরের বাসিন্দাদের দাবি, এ বার পর্যটনকেন্দ্র তৈরি করুক প্রশাসন। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হবে বলে জানান আউশগ্রাম ১-র বিডিও চিত্তজিৎ বসু।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন