বিদ্যাসাগর স্টেশন চত্বরে সেই পার্ক। নিজস্ব চিত্র
মূর্তি ভাঙা নিয়ে চাপানউতোরের মাঝেই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের স্মৃতি বিজড়িত এলাকায় শিশু উদ্যান ও সংগ্রহশালা তৈরি করছে পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশন। রেলের আধিকারিকেরা জানান, মনীষীর জন্মের দু’শো বছর পূর্তিতে ঝাড়খণ্ডের অন্তর্গত করমাটাঁড় এলাকায় এই উদ্যোগ হয়েছে। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। আসানসোলের ডিআরএম প্রশান্তকুমার মিশ্র সম্প্রতি সেগুলির উদ্বোধনও করেছেন।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর কয়েক আগে ঈশ্বরচন্দ্রের সম্মানে করমাটাঁড় স্টেশনটির নামকরণ হয় বিদ্যাসাগর। এলাকার বাঙালি সোসাইটির সদস্যেরা রেল কর্তৃপক্ষের কাছে সেখানে একটি স্মৃতিসৌধ তৈরির আবেদন করেন। এর পরেই ডিআরএম ঠিক করেন, বিদ্যাসাগর স্টেশন লাগোয়া রেলের জমিতেই কিছু একটা গড়ে তোলা হবে। তিনি স্টেশন পরিদর্শন করে আবর্জনায় ঢাকা ও দখল হয়ে থাকা প্রায় আঠাশ হাজার বর্গফুট জায়গা পুনরুদ্ধারের ব্যবস্থা করেন। কাজ শুরু হয়।
আসানসোলের ডিআরএম প্রশান্তবাবু বলেন, ‘‘বিদ্যাসাগরকে সম্মান জানাতেই আমদের এই উদ্যোগ। এলাকাবাসীও সহযোগিতা করেছেন। স্টেশনটিও সাজার পরিকল্পনা হয়েছে।’’ তিনি জানান, এই উদ্যোগের পিছনে খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা।
রেল সূত্রে জানা যায়, শিশু, শাল, পলাশের মতো নানা গাছে ঘেরা ওই এলাকায় শিশুদের জন্য একটি পার্ক তৈরি হয়েছে। সেখানে রয়েছে বিদ্যাসাগরের একটি মূর্তিও। বসার জায়গা, সকাল-সন্ধ্যায় প্রবীণদের ভ্রমণের জন্য সিমেন্ট বাঁধানো রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। নতুন প্রজন্মের কাছে বিদ্যাসাগরের কীর্তি তুলে ধরার জন্য একটি সংগ্রহশালাও গড়া হয়েছে। সেখানে রয়েছে নানা ছবি ও লেখা। ছবির মাধ্যমে দেখানো হয়েছে বিদ্যাসাগরের জীবন-কাহিনি। বর্ণপরিচয়ের একটি ‘রেপ্লিকা’ও রাখা হয়েছে সেখানে।
রেলের এই উদ্যোগে খুশি করমাটাঁড়ের বিদ্যাসাগর স্মৃতিরক্ষা সমিতির প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বনাথ দেব। তিনি বলেন, ‘‘রেলের এই উদ্যোগ আমরাও নিয়মিত রক্ষা করব।’’