তিন বছরে আট নিয়ামক, ক্ষুব্ধ ছাত্রেরা

লক্ষাধিক ছাত্রের ভবিষ্যৎ পরীক্ষা নিয়ামক দফতরের হাতে। অথচ দফতরের মাথায় বারবার বদল ঘটছে। কখনও কাজ থেকে অব্যাহতি চাইছেন পরীক্ষা নিয়ামকেরা, কখনও অত্যাধিক কাজের চাপ দেখিয়ে মুক্তি চাইছেন।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৭ ০০:১০
Share:

লক্ষাধিক ছাত্রের ভবিষ্যৎ পরীক্ষা নিয়ামক দফতরের হাতে। অথচ দফতরের মাথায় বারবার বদল ঘটছে। কখনও কাজ থেকে অব্যাহতি চাইছেন পরীক্ষা নিয়ামকেরা, কখনও অত্যাধিক কাজের চাপ দেখিয়ে মুক্তি চাইছেন। সবমিলিয়ে, গত তিন বছরে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা নিয়ামকের দায়িত্ব সামলাতে এসেছেন আট জন। তার মধ্যে গত দু’দিনে বদলেছেন দু’জন।

Advertisement

২০১৪ সালে স্নাতক স্তরের ফলবিভ্রাটের রেশ ছিল বহুদিন। তারপরেও ফল বেরোতে দেরি, প্রশ্ন বিভ্রাটের ঘটনা ঘটেছে বারবার। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তার কথায়, “কোনও পরীক্ষা নিয়ামকই গত তিন বছর ধরে ফলে গোলমাল নিয়ে সঠিক তথ্য জমা দিতে পারছেন না। তার ফলে বিশ্ববিদ্যালয় এখনও পর্যন্ত গত তিন বছরের ‘মেরিট লিস্ট’ প্রকাশ্যে আনতে পারেননি। সবচেয়ে লজ্জার ব্যাপার বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন বছর সমাবর্তন অনুষ্ঠানও হয়নি!” বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, একদিকে পার্ট ৩-এর খাতা দেখা চলছে। তিন জেলার লক্ষাধিক পড়ুয়া পার্ট ১ (সাধারণ) পরীক্ষা দিচ্ছে। তার মাঝে পরীক্ষা নিয়ামক চলে যাওয়ায় গণ্ডগোলেরও আশঙ্কা করছেন ছাত্র ও কর্মীরা। উপাচার্য নিমাই সাহার যদিও আশ্বাস, “কোনও সমস্যা হবে না।”

এই বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন বছর আগে সুকুমার মুখোপাধ্যায় টানা আট বছর পরীক্ষা নিয়ামকের দায়িত্বে ছিলেন। তারপর থেকে অবশ্য ক্রমাগত বদল চলছে ওই পদে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, স্থায়ী পদে থাকা পরীক্ষা নিয়ামক দীপককুমার সোমের আমলে ফল বিভ্রাট তুঙ্গে ওঠে। ছাত্র বিক্ষোভে উত্তাল হয় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মনোমালিন্যে তিনি পদ ছাড়েন। এক বছর পরে, ২০১৫ সালে ওই পদে স্থায়ী নিয়ামক হিসেবে যোগ দেন বীরভূমের একটি কলেজের শিক্ষক রাজীবকুমার মুখোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে প্রশ্ন-বিভ্রাট ও অস্থায়ী পদে নিয়োগ নিয়ে কর্মসমিতির সদস্যদের মনোমালিন্য হয়। কাজ থেকে অব্যহতি নিয়ে চলে যান তিনি। তারপরে চার জন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অস্থায়ী হিসেবে ওই পদে যোগ দেন। কিন্তু কেউই বেশিদিন টেকেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজসমূহের পরিদর্শক সুজিত চৌধুরী অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়ে আট মাস চালান। বেশ কয়েকবার ঘেরাওয়ের পরে তিনিও ওই পদ ছেড়ে দেন। একই অবস্থা হয় দু’মাস দায়িত্ব নেওয়া তন্ময়বাবুর। কাজের চাপে ‘অসুস্থ’ হয়ে পড়ছেন বলে অব্যহতি চাইছিলেন তিনি। জানা যায়, তাঁর জায়গায় বুধবার আসার কথা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়েরই ইতিহাসের অধ্যাপক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়ের। তবে প্রদীপবাবু দায়িত্ব স্বীকার করেননি বলে জানা গিয়েছে। তারপরেই বৃহস্পতিবার অস্থায়ী ভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়েরই দর্শনের অধ্যাপক তফ্ফাজল হোসেনকে।

Advertisement

উপাচার্য বলেন, “স্থায়ী পরীক্ষা নিয়ামক চেয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। এ সমস্যা কেটে যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন