তালাবন্ধ ঘর থেকে কান্নার শব্দ, বৃদ্ধা উদ্ধার

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দু’দিন ধরে অভুক্ত অবস্থায় তালাবন্ধ হয়ে পড়েছিলেন বছর পঁচাত্তরের ওই মহিলা। তালা ভাঙার পরে পড়শিরাই তাঁকে ভাত খাওয়ান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৫৭
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

তালা লাগানো একতলা বাড়ি থেকে ভেসে আসছিল বৃদ্ধার কান্নার আওয়াজ। তা শুনতে পেয়ে স্থানীয় ক্লাবের যুবকদের জানান পাড়ার মহিলারা। খবর যায় বর্ধমান থানায়। বর্ধমানের ছোটনীলপুরে সোমবার পুলিশ গিয়ে তালা ভেঙে বাড়ি থেকে উদ্ধার করল ওই বৃদ্ধাকে।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দু’দিন ধরে অভুক্ত অবস্থায় তালাবন্ধ হয়ে পড়েছিলেন বছর পঁচাত্তরের ওই মহিলা। তালা ভাঙার পরে পড়শিরাই তাঁকে ভাত খাওয়ান। পড়শিরা বৃদ্ধার পাশে দাঁড়ালেও তাঁর ইঞ্জিনিয়ার ছেলে মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এটা এমন কিছু বড় ঘটনা নয়। পাড়ার লোকেরা বাড়াবাড়ি করেছেন।”

ছোটনীলপুরের ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কাছে একটি বাড়িতে থাকেন মায়া বন্দ্যোপাধ্যায় নামে ওই বৃদ্ধা। তাঁর ছেলে সপরিবারে কলকাতার উল্টোডাঙায় থাকেন। তাঁর দুই বিবাহিত মেয়েরা থাকেন সোদপুর ও কৃষ্ণনগরে। এ দিন সন্ধ্যায় বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মায়াদেবী অসুস্থ অবস্থায় বিছানায় শুয়ে রয়েছেন। কোনও কথা স্পষ্ট ভাবে বলতেও পারছেন না।

Advertisement

পাড়ার বধূ সোমা সরকার, পিঙ্কি ঘোষেরা বলেন, “মাসিমা (ওই বৃদ্ধা) তালাবন্ধ অবস্থায় একাই থাকেন। তবে এক পরিচারিকা দিনে এক বার বাড়িতে আসেন। গত দু’দিন ধরে পরিচারিকা আসছেন না। তাই মাসিমা অভুক্ত অবস্থায় তালাবন্ধ হয়ে পড়েছিল।’’ তাঁরা জানান, ভোর থেকে কান্নার আওয়াজ পাচ্ছিলেন তাঁরা। দুপুরেও তা শুনে তাঁরা গিয়ে দেখেন, তালা দেওয়া রয়েছে। তখন পাড়ার ছেলেদের ও পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। তাঁদের দাবি, বৃদ্ধার ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি রাতের মধ্যে বর্ধমানে আসবেন বলে জানিয়েছেন।

পাড়ার যুবকেরা জানান, তাঁরাই ওই বৃদ্ধাকে বিছানা থেকে তুলে স্নান করিয়েছেন, ঘর পরিষ্কার করে দিয়েছেন। স্থানীয় ক্লাবের সম্পাদক বিশ্বজিৎ মজুমদার বলেন, “ওঁর ছেলে বর্ধমানে এলে আমরা জানিয়ে দেব, এ ভাবে বৃদ্ধাকে ফেলে রাখা যাবে না।’’

এ সবের মধ্যেই অস্ফুটে মায়াদেবী বলে ওঠেন, “রাতে রুটি নয়, ভাত খাব।” দাবি রাখার আশ্বাস দেন পাড়ার ছেলেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন