পথের কুকুরকে খাওয়ানো নিয়ে অশান্তির জেরে এক বৃদ্ধের আত্মহত্যার ঘটনায় সরগরম পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার সুদপুর। পরিবারের দাবি, শুক্রবার অশান্তির পরে কীটনাশক পান করে অসুস্থ হয়ে পড়েন ননীগোপাল ঘোষ (৭০)। বর্ধমানের একটি নার্সিংহোমে সোমবার দুপুরে মারা যান তিনি।
ননীগোপালবাবুর ছোট ছেলে উত্তম ঘোষ বলেন, ‘‘বাবা রাস্তার কুকুরদের আগলে রাখতেন। তা নিয়ে মায়ের সঙ্গে অশান্তি হয়। তার জেরেই বিষ খান।’’ তদন্তের পরে, তেমনই ধারণা পুলিশেরও। এলাকাবাসী জানাচ্ছেন, আগে মাঠে চাষের কাজ করলেও বয়স বাড়ার পরে বাড়িতেই দেখা যেত ননীগোপালবাবুকে। পথের কুকুরদের সঙ্গে কাটাতেন অনেকটা সময়। তাদের খাওয়ানো, শুশ্রূষা সবই করতেন তিনি। পরিবার সূত্রের খবর, শুক্রবার দুপুরেও কুকুরদের মুড়ি খাওয়াতে চান তিনি। তখনই আপত্তি জানান স্ত্রী বিমলাদেবী। মৃতের বড় ছেলে গৌতম ঘোষের দাবি, ‘‘মা বাসি পান্তা দিতে বলেন। তা নিয়ে অশান্তি বাধে। গুম হয়েছিলেন বাবা। পরে বাথরুমে ঢুকে বিষ খান।’’
বিমলাদেবী কিছু বলতে চাননি। তবে দুই ছেলের বক্তব্য, ‘‘অবলা জীবের প্রতি বাবার ভালবাসার দিকটা আমরা বুঝতাম। কিন্তু উনি এমন করবেন, ভাবিনি।’’ কাটোয়ার একটি পশুপ্রেমী সংস্থার সম্পাদক অনুপ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যেখানে লোকে ষোলোটা কুকুরছানাকে পিটিয়ে মারছে, সেখানে এমন ঘটনা ভাবতে অবাক লাগে।’’ ননীগোপালবাবু কৃষিজীবী বলে পরিবারের দাবি। তা হলে তাঁর অপমৃত্যুতে পরিবার কি ক্ষতিপূরণ পাবে? মহকুমাশাসক (কাটোয়া) সৌমেন পাল বলেন, ‘‘শুনেছি, ওই বৃদ্ধের মৃত্যুর সঙ্গে চাষবাসের সম্পর্ক নেই। তবে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে নির্দেশিকা আসেনি। ফলে, ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে কি না, বলতে পারব না।’’