মুচিপাড়া আইটিআই-এর ভাঙা পাঁচিল। নিজস্ব চিত্র।
তিন দিন ধরে শহর ও লাগোয়া এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে হাতি। দুর্গাপুরে ঢুকে পড়া একটি হাতিকে দামোদর পার করে ফেরত পাঠানোর জন্য রবিবার দিনভরও হিমসিম খেলেন বন দফতরের কর্মীরা। শেষমেশ বাঁকুড়া থেকে দু’টি কুনকি হাতি নিয়ে এসে সেটির তল্লাশির সিদ্ধান্ত নেয় বন দফতর।
২ ফেব্রুয়ারি বীরভূমের ভীমগড় জঙ্গল থেকে অজয় পেরিয়ে তিনটি হাতির একটি দল ঢুকে পড়ে পাণ্ডবেশ্বরের রামনগরে। তাদের হামলায় সেখানে বেশ কয়েকজন জখম হন। মৃত্যু হয় এক জনের। বনকর্মী ও বাসিন্দাদের তাড়া খেয়ে হাতি তিনটি আলাদা হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তাদের মধ্যে একটি ঢুকে পড়ে দুর্গাপুর শহরে। গোপালমাঠ হয়ে পৌঁছে যায় দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টে (ডিএসপি)। জখম করে দু’জনকে। শুক্রবার রাতে তাড়া খেয়ে হাতিটি ওয়ারিয়া হয়ে ডিপিএল কলোনি ঘুরে বীরভানপুরের দিকে এগোয়। পথে সামনে পড়ে যাওয়া এক প্রৌঢ়াকে আছাড় মেরে দামোদর পেরিয়ে বাঁকুড়ায় চলে যায়।
সেই রাতে বাকি দু’টি হাতির একটি কাঁকসার কাঁটাবেড়িয়ার জঙ্গলে এবং অন্যটি পানাগড়ের জঙ্গলে আশ্রয় নেয়। শনিবার সকালে একটি হাতি গুসকরার দিকে চলে যায়। অন্যটি বিধাননগর হয়ে দুর্গাপুর শহরে ঢোকে। দুপুরে সেটি এবিএল জঙ্গলে আশ্রয় নেয়। রাতে বনকর্মী ও হুলাপার্টির তাড়া খেয়ে ভোরবেলায় সেটি এফসিআই জঙ্গলে ঢুকে পড়ে। সেখানে যাওয়ার সময়ে মুচিপাড়া আইটিআই-এর সীমানা পাঁচিলের একাংশ ভেঙে দেয় হাতিটি।
রবিবার সারা দিন অবশ্য হাতিটিকে আর দেখা যায়নি। বনকর্মীরা জানান, ঘন জঙ্গলে ঢুকে পড়েছে সেটি। সেখানে পায়ে হেঁটে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না বনকর্মীদের পক্ষে। আবার, আচমকা জঙ্গল থেকে বেরিয়ে হাতিটির জনবহুল এলাকায় হানা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই হাতিটির হদিস পাওয়ার জন্য কুনকি হাতির পিঠে চড়ে জঙ্গলে ঢোকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বন দফতরের কর্তারা। দুর্গাপুরের বন আধিকারিক মিলন মণ্ডল বলেন, ‘‘হাতিটি ওই জঙ্গলেই আছে কি না, বাইরে থেকে বোঝা মুশকিল। সে জন্য বাঁকুড়া থেকে কুনকি হাতি এনে বনকর্মীদের ভিতরে যাওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে।’’ তবে এ দিন সেই অভিযান শুরু হয়নি বলে বন দফতর সূত্রের খবর।