পরীক্ষার প্রশ্নে বিভ্রাট, ক্ষুব্ধ কলেজ পড়ুয়ারা

এ দিন দ্বিতীয় বর্ষের ভূগোল পরীক্ষার প্রথম সেমেস্টারের পঞ্চম পত্রের পরীক্ষা ছিল এ দিন। কিন্তু প্রশ্নপত্র বিলির পরেই আসানসোলের কয়েকটি কলেজের পড়়ুয়ারা অভিযোগ করেন, প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়েছে ষষ্ঠ পত্রের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:২২
Share:

পরীক্ষা ছিল পঞ্চম পত্রের। কিন্তু পরীক্ষা হলে বসে পরীক্ষার্থীদের চক্ষু চড়কগাছ। কারণ, প্রশ্ন দেওয়া হয়েছে ষষ্ঠ পত্রের। — এমনই অভিযোগে বুধবার কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত কলেজগুলিতে স্নাতক স্তরের দ্বিতীয় বর্ষের ভূগোলের পড়ুয়ারা বিক্ষোভ দেখালেন। শেষমেশ পরীক্ষা বাতিল করে অন্য দিন পরীক্ষা নেওয়ার কথা জানান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন দ্বিতীয় বর্ষের ভূগোল পরীক্ষার প্রথম সেমেস্টারের পঞ্চম পত্রের পরীক্ষা ছিল এ দিন। কিন্তু প্রশ্নপত্র বিলির পরেই আসানসোলের কয়েকটি কলেজের পড়়ুয়ারা অভিযোগ করেন, প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়েছে ষষ্ঠ পত্রের। এরপরেই বিক্ষোভ দেখান পরীক্ষার্থীদের একাংশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরীক্ষার্থী জানান, ভুল প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়েছে বুঝেই পরীক্ষার হলে থাকা পরিদর্শকেরা তড়িঘড়ি প্রশ্নপত্রগুলি পরিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়ে নেন।

পরীক্ষার্থীদের ক্ষোভের কথা চাউর হওয়ার খানিক বাদেই এ দিনের পরীক্ষা বাতিল ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, ১৯ জানুয়ারি এই পরীক্ষাটি নেওয়া হবে। কিন্তু এর পরেও প্রশ্ন ওঠে, তা হলে ষষ্ঠ পত্রের প্রশ্নপত্রও তো জানা হয়ে গেল, তার কী হবে? বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, সেই পরীক্ষা বাতিল করে অন্য দিন পরীক্ষা নেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

Advertisement

ভুল প্রশ্নপত্র বিলির কথা সামনে আসতেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে ছাত্র সংগঠনগুলিও। এসএফআই-এর পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক হিমগ্ন চন্দের প্রশ্ন, ‘‘প্রশ্নপত্র পরীক্ষা না করেই কী ভাবে কলেজে পাঠানো হল? এটা খুবই বড় ভুল।’’ এসএফআই-এর আরও অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের পরীক্ষাগুলিতে প্রায়ই এমন ভুলভ্রান্তি থাকছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে টিএমসিপি-ও। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক আদর্শ শর্মা বলেন, ‘‘এমন ভুলভ্রান্তি আগেও হয়েছে। এমন ভুল যাতে আগামী দিনে না হয়, তার জন্য আমরা পরীক্ষা নিয়ামকের কাছে আর্জি জানিয়েছি।’’

এই ধরনের ঘটনা সামনে আসায় ক্ষুব্ধ কলেজ শিক্ষকেরাও। তাঁদের অভিযোগ, এর ফলে আখেরে পড়ুয়াদেরই ক্ষতি হচ্ছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনামও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কলেজ শিক্ষক চন্দ্রশেখর কুণ্ডুর অভিযোগ, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সময়মতো পরীক্ষার ফলও প্রকাশ করতে পারছেন না।’’ তবে এ দিনের ‘ভুল’-এর অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে পরীক্ষা নিয়ামক সলীলকুমার দাস বলেন, ‘‘আমি কিছু বলব না’’। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অমিত আব্রাহাম বলেন, ‘‘ছাপাখানার ভুলের জন্যই এমন বিপত্তি। পরীক্ষার্থীদের সমস্যা হওয়ায় দুঃখিত’’। তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট ছাপাখানার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন