মাথার উপরে দু’বার চক্কর, হইচই জনতার

সকাল থেকে হাপিত্যেস করে বসে থেকে থেকে কেটে গিয়েছিল গোটা শনিবার। শেষ পর্যন্ত আশ মিটল রবিবার। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ আকাশে দেখা দিল সে। মাথার উপরে দু’বার চক্কর কেটে সোজা নেমে এল রানওয়েতে। হেলিকপ্টার পরিষেবা শুরু হয়েছিল ২০১৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর। অন্ডাল বিমানবন্দরে প্রথম কোনও বিমান নামল রবিবার। এলাকার লোকজন খবরটা পেয়েছিলেন দিন কয়েক আগে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৫ ০১:০৭
Share:

অন্ডালে পরীক্ষামূলক ভাবে নামল বিমান। রবিবার। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।

সকাল থেকে হাপিত্যেস করে বসে থেকে থেকে কেটে গিয়েছিল গোটা শনিবার। শেষ পর্যন্ত আশ মিটল রবিবার। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ আকাশে দেখা দিল সে। মাথার উপরে দু’বার চক্কর কেটে সোজা নেমে এল রানওয়েতে।

Advertisement

হেলিকপ্টার পরিষেবা শুরু হয়েছিল ২০১৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর। অন্ডাল বিমানবন্দরে প্রথম কোনও বিমান নামল রবিবার।

এলাকার লোকজন খবরটা পেয়েছিলেন দিন কয়েক আগে। ঠিক ছিল, শনিবার থেকে এয়ারপোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার আধিকারিকেরা নিজেদের ছোট বিমান নিয়ে এসে তিন দিনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা পর্ব সারবেন। এই রিপোর্টের ভিত্তিতেই মিলবে ডিরেক্টর জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন থেকে বাণিজ্যিক ভাবে উড়ান চালুর ছাড়পত্র। সেই মতো শনিবার সকাল থেকে আশপাশের আরতি, পাটশ্যাওড়া, ইছাপুর, সরপি ইত্যাদি গ্রামের বাসিন্দারা অপেক্ষায় ছিলেন, কখন বিমান নামে। কিন্তু সে দিন আর বিমানের দেখা মেলেনি।

Advertisement

রবিবার সকালে অবশ্য হাসি ফোটালো সাদা রঙের ১২ আসনের বিমানটি। আকাশে দেখেই হইহই করে উঠলেন বাসিন্দারা। মাথার উপরে চক্কর কেটে সেই বিমান সোজা নেমে পড়ল রানওয়েতে। পাঁচিলের আড়ালে চলে যাওয়ায় আর কিছু দেখতে পাননি বাসিন্দারা। তবে তাঁরা জানান, এ দিন একাধিক বার নানা দিক থেকে বিমানটি ওঠানামা করবে বলে শুনেছিলেন তাঁরা। কিন্তু তা হয়নি। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও বিমান ওড়া দেখতে না পেয়ে ঘরের পথ ধরে জনতা। দুলাল গোস্বামী, বিশ্বনাথ বাউড়িরা বলেন, “যাক, তবু তো দেখতে পেলাম এক বার!” শেষ পর্যন্ত বিকাল ৫টা নাগাদ বিমানটি অন্ডাল থেকে উড়ে যায়।

বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই তাঁরা শুনছিলেন বিমান নামবে। কিন্তু তা হয়নি। এ দিন বিমান বন্দরের পাঁচিল ঘেঁষে পাহারায় ছিলেন শ’খানেক পুলিশকর্মী। তাই শেষ পর্যন্ত বিমান নামলেও পুলিশি কড়াকড়িতে ঠিক ভাবে দেখতে পেলেন না বলে আক্ষেপ তাঁদের। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই প্রহরা রাখা হয়েছিল। বিএপিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন রানওয়ের বিভিন্ন দিকে মাপজোক করেন এয়ারপোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার আধিকারিকেরা। এ ছাড়া পরিবেশগত নানা তথ্যও সংগ্রহ করেন তাঁরা। আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সোমবার সকালে বিমানটি ফের আসবে অন্ডালে।

বাম আমলে অন্ডাল বিমাননগরী নির্মাণের পরিকল্পনা হয়। জমি নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০০৭ সালে। ২০১৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নামকরণ করেন ‘কাজি নজরুল ইসলাম বিমানবন্দর’। জানিয়ে দেন, সে বছর বাংলা নববর্ষের দিন থেকে উড়ান চালু হবে। রানওয়ে, যাত্রী টার্মিনাল, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল ইত্যাদি তৈরি হয়ে গেলেও রানওয়ের উপর দিয়ে আড়াআড়ি যাওয়া উচ্চ পরিবাহী বিদ্যুতের লাইনের জন্য বিমানবন্দর চালু করতে ডিরেক্টর জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)-এর ছাড়পত্র মেলেনি। বিদ্যুতের লাইন সরানোর কাজ শুরু হয় সরকারি মধ্যস্থতায়। কিন্তু বারবার তা বাধা পেয়েছে। অনেক টালবাহানার পরে সম্প্রতি বিদ্যুতের লাইন সরানোর কাজ শেষ হয়।

বিএপিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, এয়ারপোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার পরিদর্শনের পরে ডিজিসিএ-র ছাড়পত্র পেতে তিন-চার সপ্তাহ সময় লাগে। তাই গত বছর বাংলা নববর্ষে বিমান পরিষেবা চালু না হলেও এ বার থাকছে সেই সম্ভাবনা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন