জামুড়িয়ার তপসি গ্রামেও দেখা গেল দাঁতালের দিকে ইট ছোড়ার দৃশ্য। —ওমপ্রকাশ সিংহ
শুক্রবার গভীর রাত থেকে তাণ্ডব চালানো দাঁতাল দু’টির খোঁজ পাচ্ছে না বন দফতর। শনিবার রাত ৯টার পর থেকে সেগুলিকে আর দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না বলে বন দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে। কিন্তু লোকালয়ের আশপাশেই দাঁতালগুলি রয়েছে বলে জানাচ্ছেন জামুড়িয়ার বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা। তার জেরে এলাকাগুলিতে আতঙ্কও ছড়িয়েছে।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাঁটি এলাকার দাঁতালগুলি মেজিয়া মানাচর ধরে তিরাট ঘাট পেরিয়ে রানিগঞ্জে আসে। এর পরে স্থানীয় দামালিয়া গ্রামে ঢুকে একটি দোকানে তাণ্ডব চালায়। পরে জেকেনগরের বেলিয়াবাগান ও জামুড়িয়ার বেনালি গ্রামে বেশ কয়েকটি দোকানে ভাঙচুর করে। বিস্তীর্ণ খেতের ফসলও নষ্ট করে দেয় বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। এর পরেই খবর পেয়ে বিকেল ৪টে নাগাদ বন দফতরের ১৮ জন কর্মী এসে পৌঁছন বেনালী গ্রামে। দাঁতাল দু’টিকে তাড়িয়ে স্থানীয় জবা গ্রাম পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়।
আসানসোলের রেঞ্জ অফিসার নীরদ মুখোপাধ্যায় জানান, শনিবার রাত ৯টা নাগাদ জবা গ্রামের ইটভাটার কাছ থেকে দাঁতালগুলিকে শেষ বার দেখতে পান বন দফতরের কর্মীরা। এর পর থেকে সেগুলির আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। নীরদবাবু জানান, বাঁকুড়ায় প্রায়ই হাতির তাণ্ডব হয়। সেখানকার বন দফতরের কর্মীরা হাতি তাড়াতে অভ্যস্ত। দাঁতাল দু’টির খোঁজ পেলেই সেগুলিকে তাড়ানোর জন্য বাঁকুড়া থেকে হুলাপার্টি নিয়ে আসা হবে। কিন্তু যতক্ষণ না খোঁজ পাচ্ছেন, তাঁদের পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয় বলে জানান নীরদবাবু।
এ দিকে জামুড়িয়ার বালনপুরের বাসিন্দা আনন্দমোহন সিংহ জানান, গ্রামের অদূরে ফাঁকা মাঠে তাঁর একটি হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে। শনিবার রাতে পাশে হাঁস-মুরগীর খাবার রাখার একটি ঘরে শুয়েছিলেন তিনি। রাত ৩টে নাগাদ প্রচণ্ড শব্দে ঘুম ভেঙে দেখেন, দু’টি দাঁতাল সেখানে ঢুকে ভাঙচুর চালাচ্ছে। কোনও রকমে সেখান থেকে তিনি বেরিয়ে আসতে পারলেও বেশ কয়েক বস্তা চাল, ডাল ও গুড় দাঁতালগুলি নষ্ট করে দিয়েছে বলে জানান আনন্দবাবু। বন দফতর খোঁজ পাচ্ছে না বলে দাবি করলেও স্থানীয় তপসি গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ দাঁতাল দু’টি কাছের পাঁচ নম্বর কোলিয়ারি জঙ্গলে ঢুকে পড়েছে। আতঙ্কে দুপুর থেকেই বাসিন্দারা মশাল জ্বালানোর প্রস্তুতি শুরু করে দেন। তবে বন দফতরের দাবি, নির্দিষ্ট ভাবে দাঁতালগুলির কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। খোঁজ পেলেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস বন দফতরের।