বাড়ির ছাদের বাগানেই ফলছে ধান, সব্জি থেকে মাছ, বায়ো গ্যাসে হচ্ছে রান্নাও!

টম্যাটো, বেগুন, ফুলকপির থেকে ধান এমনকী, মাছ— বাড়ির ছাদে ফলছে সবই।বর্ধমানের ডিভিসি-মালঞ্চ পাড়ায় রায়বাড়ি গেলেই দেখা যাবে এমন ছাদের বাগান। বাবা-ছেলে অশোক রায় ও অঙ্কিতের চেষ্টায় কংক্রিকেট জঙ্গলের মাঝে তরতরিয়ে বাড়ছে নানা ধরণের শাক, পিঁয়াজ-আদা-রসুন থেকে দেশি পান।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৭ ১০:১০
Share:

পরিচর্যা: এ ভাবেই বর্ধমানের ডিভিসি-মালঞ্চপাড়ায় রায়বাড়ির ছাদে তৈরি হয়েছে বাগান। নিজস্ব চিত্র

টম্যাটো, বেগুন, ফুলকপির থেকে ধান এমনকী, মাছ— বাড়ির ছাদে ফলছে সবই।

Advertisement

বর্ধমানের ডিভিসি-মালঞ্চ পাড়ায় রায়বাড়ি গেলেই দেখা যাবে এমন ছাদের বাগান। বাবা-ছেলে অশোক রায় ও অঙ্কিতের চেষ্টায় কংক্রিকেট জঙ্গলের মাঝে তরতরিয়ে বাড়ছে নানা ধরনের শাক, পিঁয়াজ-আদা-রসুন থেকে দেশি পান।

তিনতলা ছাদে ফাইবারের চাদর পেতে মাটি ফেলে চাষ চলছে। জৈব পদ্ধতিতে চাষের পর উৎপন্ন ফসলের খোসা ও রান্না করা খাবারের উচ্ছিষ্ট দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে জৈব গ্যাস। ওই গ্যাসেই আবার চা-দুধ ফোটাচ্ছেন বাড়ির লোকেরা।

Advertisement

কলকাতার রাজারহাটে সাততলা বাড়ির ছাদে ধাপে ধাপে লোহার খাঁচা তৈরি করে কুমড়ো, ক্যাপসিকাম, ফুলকপি ফলিয়ে নজর কেড়েছেন খড়্গপুর আইআইটি-র কৃষিবিজ্ঞানের অধ্যাপক বিজয়চন্দ্র ঘোষ। তার পরামর্শে ছাদে-চাষে উৎসাহ পেয়েছেন আরও অনেকে। অঙ্কিতবাবুর মাথায় এমন ভাবনা অবশ্য এসেছে তার আগেই। দাদু আনন্দকালীবাবু বলেন, “বড় ছেলে অশোক সিভিল ইঞ্জিনিয়র ছিল। আচমকা অসুস্থ হয়ে চোখ ও শরীরের এক দিক অকেজো হয়ে পড়ে। চিকিৎসকরা জানান, কীটনাশক দেওয়া খাবার থেকেই এমন রোগ। তখন বাড়ি ফিরে ছাদে চাষ শুরু করে ছেলে। তারপর গত সাত বছর আমাদের বাজার থেকে সব্জি, ফল কিনে খেতে হয়নি।’’

ওই বাড়ির নীচেই আসবাবপত্রের ব্যবসা রয়েছে তাঁদের। ৬০ জন কর্মী কাজ করেন। ব্যবসা দেখার পাশাপাশি প্রায় ১৮০০ বর্গফুট জায়গায় নিরলস পরিশ্রম করে প্রয়োজনীয় সব্জি ফলান অঙ্কিতেরা। বাঁধাকপি, ফুলকপি, ক্যাপসিক্যাম, পটলের সঙ্গে আম, লিচু, আখও হয় সেখানে। এর সঙ্গেই ছাদের এক কোনে দুটি বড় চৌবাচ্চায় ১২ রকম দেশি মাছের চাষ করেন তাঁরা। মাগুর, কই, তেলাপিয়া, ট্যাঙরা সবই রয়েছে সেখানে। তার সঙ্গেই জুড়েছে ধান চাষ।

অশোকবাবুর কথায়, “আমরা পরীক্ষামূলক ভাবে ধান চাষ করেছি। ধানের জমিতেই মাছ চাষ করা হচ্ছে। এক জমিতে দুটো চাষ করে সফল হলে বড় আকারে ভাবব।’’ তাঁর দাবি, ছাদের উপর ১০০ বর্গফুট জায়গায় ৬ কেজি ধান উৎপাদন করা সম্ভব। অঙ্কিতও জানান, এতে একদিকে জৈব পদ্ধতিতে উৎপাদিত সব্জি ও ফল খাওয়া যায়, অন্যদিকে রান্নাঘর ও বাগানের বর্জ্যকে কাজে লাগানো যায়। তাঁর দাবি, ‘‘অনেকে এগিয়ে এলে এই চাষে উৎসাহ আরও বাড়বে।’’

কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ষার পরে শিক্ষামূলক ভ্রমণে অঙ্কিতদের বাড়ির ছাদে চাষ কী ভাবে হচ্ছে তা ৫০ জন চাষিকে ঘুরিয়ে দেখানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন