মাটি-তৈরি: নেপালিপাড়া হিন্দি হাইস্কুলে পড়ুয়ারা। ছবি: বিকাশ মশান
মাটি তৈরি কত দূর, কতটা সার মজুত রাখতে হবে, এমনই নানা খুঁটিনাটি বিষয়ে নিয়মিত খোঁজ-খবর নিচ্ছেন স্কুলের ‘বৃক্ষমিত্র’ ক্লাবের পড়ুয়ারা। পড়ুয়াদের সঙ্গে বৃক্ষরোপণের উৎসবে যোগ দিয়েছেন শিক্ষকেরাও। বর্ষার আগেই দুর্গাপুরের কয়েকটি স্কুলে এমন ভাবেই তোড়জোড় চলছে গাছ রোপণের। পড়ুয়াদের দাবি, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বৃক্ষরোপণের যাবতীয় কাজ শেষ হয়ে যাবে।
গত বছর সেপ্টেম্বরে সাবেক বর্ধমানের তৎকালীন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন জেলার নানা স্কুলে ‘বৃক্ষমিত্র’ তৈরিতে উদ্যোগী হন। তাঁর উপস্থিতিতেই দুর্গাপুরের নেপালিপাড়া হিন্দি হাইস্কুলে ক্লাবের পথচলা শুরু হয়। প্রশাসনের সূত্রে জানা যায়, ওই দিনই এই স্কুল ও লাগোয়া চারটি স্কুলের পড়ুয়াদের হাতে দু’টি করে গাছের চারা তুলে দেওয়া হয়।
শুক্রবার খোঁজ নিয়ে জানা গেল, নেপালিপাড়া হিন্দি হাইস্কুলে ইতিমধ্যেই মাটি তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। টিফিনের সময়ে বা স্কুল ছুটির পরে সেই কাজের দেখাশোনা করছে পড়ুয়ারাই। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, ইতিমধ্যেই ডিএসপি থেকে জানানো হয়েছে, স্কুলে ৫০টি গাছের চারা দেওয়া হবে। পড়ুয়া অলোক মিত্র, নিরঞ্জন যাদবরা জানায়, ‘‘স্কুলের সবুজায়নই লক্ষ্য। তার জন্য বৃষ্টিতে ভিজেও বাগান তৈরি করছি।’’ পড়ুয়াদের এমন উদ্যোগে উৎসাহ জোগাচ্ছেন শিক্ষকেরাও। প্রধান শিক্ষক কলিমুল হক বলেন, ‘‘চারা রোপণের পাশাপাশি স্কুল চত্বরে থাকা পুরনো গাছগুলি চিহ্নিত করে ফলক লাগানোর জন্য বন দফতরের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে। এই উদ্যোগে পরিবেশ রক্ষা যেমন হবে, তেমনই পড়ুয়ারাও গাছ চিনতে পারবে।’’
দুর্গাপুরেরই বিজড়া হাইস্কুলেও এ বছর একশোটি গাছ রোপণ করা হবে বলে জানান প্রধান শিক্ষক কাজী নিজামুদ্দিন। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ৫০টি চারা দেবে। বাকি ৫০টি চারা কেনা হবে স্কুলের তহবিল থেকে।
বৃক্ষমিত্র ক্লাবের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের নাদনঘাটের রামপুরিয়া হাইস্কুলের শিক্ষক, ‘গাছ মাস্টার’ বলে পরিচিত অরূপ চৌধুরীও। তিনি বলেন, ‘‘এমন উদ্যোগে পড়ুয়ারা গাছকে ভালবাসতে শিখবে। পরিবেশ দূষণও কিছুটা কমবে।’’