দাদা, বোনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার

আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে জানা যায়, শহরের বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের দেখার জন্য ‘নমন’ প্রকল্প রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:০৭
Share:

আসানসোলের শ্রীপল্লিতে শনিবার। নিজস্ব চিত্র

ঘরের দরজা ভেঙে দাদা ও বোনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। শনিবার সকালে আসানসোল দক্ষিণ থানার শ্রীপল্লির ঘটনা। পুলিশ জানায়, মৃতদের নাম তুষারকান্তি নন্দী (৭২) ও জয়া নন্দী (৬৫)। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, মানসিক অবসাদের জেরেই দু’জনে আত্মঘাতী হয়ে থাকতে পারেন। দেহ দু’টির ময়না-তদন্ত করানো হয়েছে আসানসোল জেলা হাসপাতালে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, তুষারবাবু দুর্গাপুরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় চাকরি করতেন। বছর দশেক আগে তিনি অবসর নিয়েছেন। প্রায় ৪৫ বছর ধরে তাঁরা এই পাড়ায় বাস করছেন। দাদা এবং বোন, দু’জনেই অকৃতদার। গত বছর মে মাসে তাঁদের মা মারা গিয়েছেন। দু’জনের বাবাও মারা গিয়েছেন বেশ কয়েক বছর আগে। সম্প্রতি জয়াদেবীর ক্যানসার ধরা পড়েছিল। তা নিয়েই দাদা ও বোন চিন্তায় ছিলেন বলে পড়শিদের সূত্রে জানতে পেরেছে পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দা মিন্টু রজক বলেন, ‘‘কিছু দিন আগেই তুষারবাবু বোনের চিকিৎসার বিষয়ে খোঁজখবর করেন। সোমবার কলকাতায় চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার কথা ছিল।’’

তবে পড়শিরা জানান, শুক্রবার গভীর রাতে তুষারবাবুর মোবাইল থেকে তাঁদের কয়েকজনকে ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু রাত হয়ে যাওয়ায় কেউই ফোন ধরতে পারেননি। শনিবার সকালে ফোনে ‘মিসড’ কল দেখতে পান তাঁরা।

Advertisement

ওই এলাকার কাউন্সিলর বাবন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এ দিন সকালে এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পান, দাদা ও বোনকে বাইরে দেখা যাচ্ছে না। বাড়ির দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। ডাকাডাকি করেও সাড়া পাচ্ছেন না পড়শিরা। এর পরে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ দরজা ভেঙে দেখে, ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে শাড়ির ফাঁসে ঝুলছে জয়াদেবীর দেহ। পাশাপাশি, জানলায় শাড়ির ফাঁসে ঝুলছে তুষারবাবুর দেহ।

আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে জানা যায়, শহরের বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের দেখার জন্য ‘নমন’ প্রকল্প রয়েছে। কমিশনারেটের এডিসিপি (‌সেন্ট্রাল) সায়ক দাস জানান, দু’টি মহকুমার মহিলা থানার আধিকারিকেরা এই প্রকল্পটির ‘নোডাল অফিসার’। যাঁরা এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে যান তাঁদের সংশ্লিষ্ট মহকুমার অন্তর্গত মহিলা থানার আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়। মহিলা থানার আধিকারিক ওই আবেদনকারী কোন থানা এলাকার বাসিন্দা তা জেনে সংশ্লিষ্ট থানার আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেবেন। এর পরে পুলিশ বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে। তবে শ্রীপল্লির ওই বৃদ্ধ-বৃদ্ধা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি বলে পুলিশ জানায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন