স্কুলে ছাত্রের সঙ্গে উদয়চাঁদবাবু।
‘হেডস্যার’ আজ অবসর নেবেন, তা জানা ছিল স্কুলের শিক্ষক, পড়ুয়া, গ্রামবাসীদের। কিন্তু টানা ৩৬ বছর ধরে যে স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন, সেই টান তো সহজে যাওয়ার নয়। তাই শেষ দিনে নিজের জমানো টাকা থেকে স্কুলের উন্নয়নের জন্য ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা জানিয়ে গেলেন শিক্ষক। সঙ্গে বিনা বেতনে সপ্তাহে তিন দিন পড়ানোরও প্রতিশ্রুতি দিলেন।
বর্ধমানের রায়ান পঞ্চায়েতের চন্দ্রহাটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে ১৯৮০ সালে যোগ দেন উদয়চাঁদ বোলার। ৩১ জুলাই তিনি অবসর নেন। মঙ্গলবার তাঁর সংবর্ধনার ব্যবস্থা করেন স্কুলের পড়ুয়া ও গ্রামের বাসিন্দারা। ভিড় জমান গ্রামবাসীরাও। গ্রামের বাসিন্দা উত্তম বন্দ্যোপাধ্যায়, সুশান্ত রায় জানান, শিক্ষকতার সঙ্গে গ্রামের মানুষের সমস্যাতেও সাহায্য করতেন উদয়বাবু। স্কুলের শিক্ষক সজল রায়, প্রাক্তন ছাত্র উত্তম মণ্ডলরা জানান, স্কুলের নতুন ভবন তৈরি, প্রাচীর দেওয়া—সবই হয়েছে উদয়বাবুর আমলে। দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করায় তিনি গ্রামেরই এক জন হয়ে গিয়েছেন। কিছু দিন আগেই আশপাশের ১৫টি স্কুলে ফার্স্ট-এড বক্স দান করেন উদয়বাবু। তিনি জানান, চিকিৎসক বাবার কাছ থেকেই মানুষের পাশে থাকার পাঠ পেয়েছেন। উৎসাহ দিয়েছেন তাঁর স্ত্রী সোমাদেবী ও ছেলে সৈকত।
অনুষ্ঠানের আগে মন খারাপ ছিল তৃতীয় শ্রেণির বৃষ্টি হাটি, কনিনিকা সাঁই, ইন্দু রায়ের। কিন্তু হেডস্যারের সপ্তাহে তিন দিন স্কুলে পড়াতে আসার কথা শুনে হাসি ফুটেছে তাদের মুখেও।