এ ভাবেই চলে পাখি বিক্রি। নিজস্ব চিত্র
পাখি বিক্রি বেআইনি। কিন্তু অভিযোগ, সে সব নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জেলার নানা প্রান্তে চলছে পাখি কেনাবেচা। পরিবেশকর্মীদের অভিযোগ, এর ফলে বন্যপ্রাণ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনই পরিবেশেও খারাপ প্রভাব পড়ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, প্রধানত, রানিগঞ্জের নেতাজি সুভাষ বসু রোডের কাছে টেলিফোন এক্সচেঞ্জ কার্যালয় লাগোয়া এলাকা, আসানসোলের বস্তিনবাজারের মুখে ও উখড়াবাজারের পাশে দীর্ঘদিন ধরে দোকান খুলে রমরমিয়ে চলছে পাখি কেনাবেচা। ‘বিক্রেতা’-দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, চন্দনা সাড়ে চারশো টাকা, তোতা সাতশো টাকা, বদ্রি সাতশো টাকা, জাভা ১২০০ টাকায় মিলবে।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ নাগরিক ও পরিবেশকর্মীরা। রানিগঞ্জের স্কুলপাড়ার বাসিন্দা বাসুদেব মণ্ডল চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “গত কয়েক বছরে বহু পাখি লুপ্ত হয়ে গিয়েছে। তার পরেও এ ভাবে ‘ব্যবসা’ চলতে থাকলে আগামী দিনে গোটা পরিবেশই আরও বিপন্ন হয়ে যাবে।’’ পাখি কেনাবেচা রুখতে বন দফতর যথেষ্ট সক্রিয় নয় বলেও অভিযোগ। পরিবশকর্মী মঞ্জু গুপ্ত জানান, এ ভাবে পাখি কেনাবেচা আইনত অপরাধ। বিষয়টি নিয়ে বহু বার বন দফতরের কাছে আর্জি জানানো হলেও ‘লোক দেখানো অভিযান’ ছাড়া কিছুই হয় না। চিকিৎসক সমেরন্দ্রকুমার বসু, উখড়া সিটিজেন্স ফোরামের সভাপতি মহেদব দত্ত, আসানসোলের বিকাশ গায়েনদের আবার আর্জি, সরকারি পদক্ষেপের সঙ্গে দরকার নাগরিক সচেতনতারও।
কিন্তু এ সব পাখি আনা হয় কোথা থেকে? রানিগঞ্জের এক পাখি ব্যবসায়ী জানান, তাঁরা কলকাতার শ্যামবাজার থেকে পাখি কিনে আনেন। সেখানেও তাঁদের কখনও ‘বাধা’র মুখে পড়তে হয়নি বলেই জানিয়েছেন ওই সব ব্যবসায়ীরা।
বিষয়টি নিয়ে আসানসোল পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, “এটা বন দফতরের দায়িত্ব। ওই দফতর অভিযানেও নামে বলে শুনেছি।’’ পশ্চিম বর্ধমান জেলা বন দফতরের মুখ্য আধিকারিক মৃণালকান্তি মণ্ডল বলেন, ‘‘আইন অনুসারে দেশি পাখি বিক্রি বন্ধ। তবে বিদেশি পাখি বিক্রিতে বাধা নেই। আমরা অভিযানে নেমে দেখেছি বিদেশি পাখিই বেশি বিক্রি হয়।”