সেলিম খান, খোকন দাস। নিজস্ব চিত্র।
এক জন হাত পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন। পাল্টায় অন্য জন বলছেন, ‘উনি অসুস্থ বাঘ’। এক জন খোকন দাস। অন্য জন ইফতিকার আহমেদ পাপ্পু।
বর্ধমান শহরের এই দুই তৃণমূল নেতার মধ্যে এমন কাজিয়া ঘিরে অস্বস্তিতে তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও দলের জেলা শীর্ষ নেতৃত্বের দাবি, সমস্যা মিটিয়ে সবাই মিলে এক সঙ্গে বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়াই করবেন তাঁরা।
সপ্তাহখানেক আগে বর্ধমান শহরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে একটি ছট পুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিয়ে শহরের দাপুটে তৃণমূল নেতা খোকন দাসের মন্তব্য ঘিরে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। বর্ধমান পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর খোকন বলেন, ‘‘সিপিএমের থেকে কিছু লোক দলে ঢুকে অশান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন। তাঁরা বিজেপি-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৃণমূলের অন্য নেতাদের থেকে নিজেকে আরও বড় নেতা বলে মনে করছেন। কিন্তু দীর্ঘ দিন তৃণমূল করে আসা নেতারা এটা বরদাস্ত করবে না। প্রয়োজনে তাদের হাত-পা ভেঙে দেওয়া হবে।’’ পুলিশকে হুমকি দেন, ‘‘অভিযোগ জানানোর পর ব্যবস্থা না নিলে পুলিশকে ঘেরাও করা হবে। অন্য দলের হয়ে কাজ করলে পুলিশকেও ছেড়ে কথা বলব না।’’
৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের সভাপতি মেহরাজ খান। তিনি সিপিএম থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। দলের নেতাদের একাংশ মনে করেন, খোকনের হুমকি এই মেহরাজকে নিশানা করেই। মেহরাজ এ নিয়ে কিছু না বললেও তাঁর এক অনুগামী তথা ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর সেলিম খান খোকনকে পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছেন। গোদা এলাকায় একটি শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে নাম না করে তিনি বলেন, ‘‘উনি অসুস্থ বাঘ। ওঁরাই বিজেপির- সঙ্গে আছেন। তাই দলের নেতা-কর্মীদের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার কথা বলছেন। এ সব তো বিজেপি নেতারা বলেন।’’
তৃণমূল নেতাদের মধ্যে এই সব কাদা ছুড়াছুড়ি নিয়ে বিজেপির জেলা যুব মোর্চা সভাপতি শুভম নিয়োগী বলেন, ‘‘এটাই ওদের সংস্কৃতি। তৃণমূলের হিংসা, মারামারি, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শুরু থেকেই রাজ্যবাসী দেখে আসছে। ২০২১ সালে মানুষ মনে মনে বিজেপিকে ক্ষমতায় নিয়ে আসবে বলে ঠিক করে নিয়েছে।’’
দলের নেতাদের প্রকাশ্যে এই কোন্দল নিয়ে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন, ‘‘দলে কিছু সমস্যা থাকলে সব মিটে যাবে। সবাই আমরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করব।’’