INTTUC

১-৭ ফলে হারল আইএনটিটিইউসি

বুধবারের এই ফলকে রাজনীতির নিরিখে এক ‘বার্তা’ হিসেবেই দেখতে চাইছেন এক সঙ্গে নির্বাচন লড়া সিটু, আইএনটিইউসি নেতৃত্ব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:৩৬
Share:

ফলপ্রকাশের পরে গোলাপি এবং হলুদ আবিরে মাতলেন সিটু, আইএনটিইউসি সমর্থকেরা। নিজস্ব চিত্র

সিটু, আইএনটিইউসি: ৭। আইএনটিটিইউসি: ১। দুর্গাপুরের সগড়ভাঙার বেসরকারি কারখানায় কর্মী সমবায়ের নির্বাচনের ‘স্কোরবোর্ড’ এমনই। বুধবারের এই ফলকে রাজনীতির নিরিখে এক ‘বার্তা’ হিসেবেই দেখতে চাইছেন এক সঙ্গে নির্বাচন লড়া সিটু, আইএনটিইউসি নেতৃত্ব। যদিও আইএনটিটিইউসি এই ফলের কারণ হিসেবে তাদের ‘বেশি উদারতা’ই দায়ী কি না, তা খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছে।

Advertisement

বুধবার ‘এভিবি এমপ্লয়িজ় কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেড’-এর নির্বাচনে মোট ৩১৪ জন কর্মীর মধ্যে ভোট দেন ২৭৯ জন। সন্ধ্যায় ফলপ্রকাশের পরে দেখা যায়, মোট আটটি আসনের মধ্যে সিটু চারটি, আইএনটিইউসি তিনটি এবং আইএনটিটিইউসি একটি আসন পেয়েছে। মোট ১৬ জন প্রার্থীর মধ্যে সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন এক সিটু প্রার্থী। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ২২০টি। অন্য দিকে, সর্বনিম্ন ভোট আইএনটিটিইউসি প্রার্থীর, ৭০টি। এর আগে ২০১৫-র নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আটটি আসনেই জয়ী হন আইএনটিটিইউসি প্রভাবিত প্রার্থীরা। সিটুর অভিযোগ, সে বার বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দেওয়া হয়। যদিও অভিযোগ মানেনি আইএনটিটিইউসি।

এ দিনের ফলকে সিটু এবং আইএনটিইউসি নেতৃত্বের একাংশ এক সঙ্গে লড়ার জয় হিসেবেই দেখছেন। এমনকি, সমঝোতা বজায় থাকবে ভোটের পরেও, এই বার্তা দিতে বিজয়োল্লাসে লাল বা সবুজ নয়, গোলাপি এবং হলুদ রংয়ের আবিরে মাতেন সমর্থকেরা, জানান দুই সংগঠনের নেতারাই। তা ছাড়া, দুর্গাপুরে ধারাবাহিক ভাবে সমঝোতা করে সাফল্য মিলছে, সেই বার্তাও ফের দেওয়া গেল বলে মনে করছেন দুই সংগঠনের নেতারা।

Advertisement

এই শহরে ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে সিপিএম, কংগ্রেস এক হয়ে লড়াইয়ে নামে। দুর্গাপুরের দু’টি আসনই হাতছাড়া হয় তৃণমূলের। জয়ী কংগ্রেস বিধায়ক পরে, তৃণমূলে পা বাড়ানোয় নানা টানাপড়েনের মধ্যেও গত দুর্গাপুর পুরভোটে অটুট ছিল জোট। পাশাপাশি, ‘এএসপি বাঁচাও’ আন্দোলনেও সিটু ও আইএনটিইউসি ২০১৭ সাল থেকে যৌথ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। এই যৌথ-লড়াই দেখা যায় সমবায় ভোটেও। সেখানে প্রথমে সিটু ও আইএনটিটিইউসি ১২টি করে এবং আইএনটিইউসি ১০টি মনোনয়নপত্র জমা দেয়। কিন্তু মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পরে দেখা যায়, আটটি আসনেই আইএনটিটিইউসি সমর্থিত প্রার্থীরা রয়েছেন। কিন্তু সিটু ও আইএনটিইউসি-র চার জন করে প্রার্থী রয়েছেন।

শ্রমিক-স্বার্থে এক সঙ্গে লড়ার গুরুত্ব রয়েছে স্বীকার করে এ দিনের ফল নিয়ে সিটু নেতা তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, ‘‘এই জয় রাজ্য ও কেন্দ্র, দু’জায়গার শাসক দলের কাছেই একটা বার্তা দিল।’’ পাশাপাশি, জেলা কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি তথা আইএনটিইউসি নেতা দেবেশ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সংগঠনের প্রয়াত নেতা বংশীবদন কর্মকার কারখানার শ্রমিক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। তাঁকে এই জয় আমরা উৎসর্গ করছি। তাঁর কাছ থেকেই শেখা শ্রমিক স্বার্থে সব সময় এক সঙ্গেই লড়তে হয়।’’

তবে বিরোধী জোট লড়াই কঠিন করেছিল তা মেনেও ‘বার্তা’র কথা স্বীকার করছেন না কারখানার আইএনটিটিইউসি নেতা অশোক জানা। তা হলে কেন এই ফল? তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘গত পাঁচ বছর ধরে সমবায়ের প্রভূত উন্নতি আমরা করেছি। কিন্তু সাংগঠনিক সমস্যার কারণে যতটা সঙ্ঘবদ্ধ হওয়া দরকার ছিল, তা হয়নি।’’ পাশাপাশি, তাঁর দাবি, ‘‘কারখানা যাতে ঠিক ভাবে চলে তাই বাকি সংগঠনগুলিকে নিয়ে আমরা এক সঙ্গে কাজ করেছি। এই বেশি উদারতার ফলে, হয়তো অনেকে আমাদের ভূমিকা আলাদা করে অনুধাবন করেননি। যদিও এমন ফলের অন্য কোনও কারণ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন