চাষ করতে হচ্ছে জল কিনে। —নিজস্ব চিত্র।
সেচের ব্যবস্থা নেই দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায়। ফলে, বর্ষার বৃষ্টিই একমাত্র ভরসা। কিন্তু বাদ সেধেছে এ বারের কম এবং অনিয়মিত বৃষ্টি। জল কিনে সেচ দিয়ে ধানের বীজতলা তৈরি করতেই বিঘা প্রতি হাজার টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। এর পরে ধান রোয়া, চারা বড় করার জন্যও জল কিনতে হলে চাষিদের লাভের গুড় পিঁপড়েয় খাওয়ার দশা। জলের অভাবে অনেকে এ বার বীজতলাও তৈরি করে উঠতে পারেননি বলে অভিযোগ চাষিদের।
বৃষ্টি না হওয়ায় বিজড়া গ্রামের চাষিরা জল কিনেই চাষ শুরু করেছেন। তাঁরা জানান, তিন কাঠা জমিতে বীজতলা তৈরি করতে তিন ঘণ্টা পাম্প চালাতে হচ্ছে। খরচ দিন-দিন বাড়ছে। স্থানীয় চাষী সন্দীপ রায় জানান, তাঁর তিন বিঘা জমিতে অন্য বছর বীজতলা তৈরি করে চারা রোয়া পর্যন্ত যা খরচ হয়, এ বছর এখনও তার থেকে প্রায় ৩ হাজার টাকা বেশি খরচ হয়েছে। এক ঘণ্টা পাম্প চললে দিতে হয় একশো টাকা। ধবনী, লবনাপাড়া গ্রামে আবার চাষই শুরু হয়নি। ফলে, গ্রামের দিনমজুরেরা ১০-১৫ কিলোমিটার দূরে কাজ করতে যাচ্ছেন। দীপা বাউরি, রুমা মণ্ডল, দিশা বাউরিরা বলেন, ‘‘নিজেদের এলাকায় কাজ না পেয়ে অন্য গ্রামে যাচ্ছি।’’
দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের এই সব এলাকার আশপাশে কোনও নদী বা সেচখাল নেই। এ বার তেমন বৃষ্টি না হওয়ায় জল কিনতে হচ্ছে চাষিদের। যাঁদের শ্যালো পাম্প রয়েছে তাঁদের কাছ থেকে বাকিরা জল কিনছেন। তাঁরা জানান, এ বার যা পরিস্থিতি তাতে আমন চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বিকল্প সেচ ব্যবস্থা না থাকলে ধান চাষ করা মুশকিল। আরও অভিযোগ, বর্ষায় ধান চাষ কিছুটা করা গেলেও রবি মরসুমে জলের অভাবে জমি ফাঁকা রেখে দিতে হয়। ফলে, আলু, সর্ষে বা বোরো ধানের চাষ করতে পারেন না। জমি পড়ে থাকে। বিডিও শুভ সিংহরায় জানান, কেউ বিষয়টি জানাননি। খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।