পরিকল্পনা: এর সামনেই হবে হকারদের পুনর্বাসন। নিজস্ব চিত্র
গাড়ি রাখার আলাদা কোনও জায়গা নেই শহরে। পুরনো বাসস্ট্যান্ডে কর্মতীর্থের সামনের জায়গাটি সেই কাজে ব্যবহারে আসে। কিন্তু এখন সেটিই হকারদের পুনর্বাসনের স্থান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। তাতেই চিন্তায় প়ড়েছেন গাড়ির চালক থেকে বাসিন্দারা। শহরে পার্কিংয়ের সমস্যা বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কায় ভুগছেন তাঁরা।
কালনা শহরে প্রতিদিন হাজার-হাজার মানুষ আসেন হাট-বাজার, অফিস-কাছারির বিভিন্ন কাজে। নানা পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনের জন্য আসেন বহু পর্যটকও। তবে প্রাচীন এই শহরে বহু বছরের সমস্যা পার্কিং। শহরে এর জন্য নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় বেশিরভাগ জনই রাস্তার আশপাশে গাড়ি রেখে দেন। ফলে, চলার পথ সংকীর্ণ হয়ে যায়। সমস্যা বেশি দেখা যায় ব্যাঙ্ক লাগোয়া রাস্তাগুলিতে।
এক সময়ে শহরে আসা লোকজনের বড় অংশ গাড়ি রাখতেন পুরনো বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। সেখানে কর্মতীর্থ গড়ে ওঠায় জায়গা অনেকটাই কমে যায়। তবে তার সামনের ফাঁকা অংশে ভারী যানবাহন ঢুকতে না পারলেও মোটরবাইক, সাইকেল রাখেন বহু মানুষ। কিন্তু এই এলাকাই হকারদের পুনর্বাসনের জায়গা হিসেবে বেছে নেওয়ায় আর কোনও খালি জায়গা পড়ে থাকবে না। ফলে, পার্কিংয়ের সমস্যা বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই।
পুরনো বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া এলাকায় বেআইনি দখলদার সরানোর জন্য বেশ কিছু ব্যবসায়ীকে উঠে যেতে হয়েছে। পুরসভা তাঁদের পুনর্বাসনের জন্য কর্মতীর্থের সামনে দু’পাশে মোট ৩২টি নির্দিষ্ট মাপের ঘর তৈরির পরিকল্পনা করেছে। ইতিমধ্যে মাপজোপ করে সেই কাজ শুরুও হয়েছে। শহরের বাসিন্দা পরিমল কর্মকার বলেন, ‘‘দোকানগুলি তৈরি হওয়ার পরে ওখানে ছোট গাড়ি রাখারও কোনও জায়গা থাকবে না। যাঁরা জিনিসপত্র কিনতে আসবেন তাঁদেরও সমস্যা হবে। প্রশাসনের দ্রুত পার্কিংয়ের জায়গা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা উচিত। আর এক বাসিন্দা কমল চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘সম্প্রতি শহরে দখল উচ্ছেদের ফলে রাস্তার দু’পাশ অনেকটা চওড়া হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট পার্কিংজোন না থাকায় ওই সব রাস্তার দু’পাশে দেদার নানা যানবাহন রাখা শুরু হয়েছে। সেটা চলতে থাকলে দখল উচ্ছেদের কোনও সুফলই মিলবে না। এ ব্যাপারে নজর দেওয়া প্রয়োজন।’’
পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, ‘‘পার্কিং সমস্যা মেটাতে পুরসভা জমির খোঁজ করছে।’’ কালনার মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়া জানান, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, শহর বা তার আশপাশে কোনও খাস জমি থাকলে তা চিহ্নিত করতে। খাস জমি পেলে না হলে পুরসভাকে পার্কিংয়ের জায়গার জন্য জমি কেনার পরামর্শ দেওয়া হবে।