রাস্তায় ধস, রক্ষা যুবকের 

সাতসকালে আচমকা আওয়াজ, ‘বাঁচাও বাঁচাও’। আর্তনাদ শুনে ছুটে আসেন কয়েক জন খনিকর্মী। এসে দেখেন, ধস নেমেছে এলাকায়। ধসের জেরে তৈরি হওয়া গর্ত থেকেই ভেসে আসছে আর্তনাদ। খনিকর্মীরা শেষমেশ ওই যুবককে উদ্ধার করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

অণ্ডাল শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৫১
Share:

বিপত্তি: রাস্তা জুড়ে ধসের জেরে তৈরি হয়েছে এমনই গর্ত। নিজস্ব চিত্র

সাতসকালে আচমকা আওয়াজ, ‘বাঁচাও বাঁচাও’। আর্তনাদ শুনে ছুটে আসেন কয়েক জন খনিকর্মী। এসে দেখেন, ধস নেমেছে এলাকায়। ধসের জেরে তৈরি হওয়া গর্ত থেকেই ভেসে আসছে আর্তনাদ। খনিকর্মীরা শেষমেশ ওই যুবককে উদ্ধার করেন। শনিবার ভোরে অণ্ডালে ইসিএলের কাজোড়া এরিয়ার মধুসূদনপুর সাত নম্বর ইনক্লাইনের সামনে আজিরবাগান এলাকার ঘটনা।

Advertisement

এলাকাবাসী জানান, এ দিন ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ আচমকা শব্দ শোনা যায়। তার পরেই কাজোড়া-দক্ষিণখণ্ড রাস্তার মাঝে আজিরবাগান এলাকায় প্রায় দশ ফুট এলাকা জুড়ে ২০ ফুট গভীর গর্ত তৈরি হয় বলে জানা গিয়েছে।

মধুসূদনপুর ইনক্লাইনের নিরাপত্তকর্মী ইয়াসিন মিঁয়া ও জগৎ বাউরি জানান, তাঁরা আচমকা ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে এক যুবকের আর্তনাদ শুনতে পান। তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, অদূরে রাস্তায় গর্ত তৈরি হয়েছে। ওই গর্তেই ঝুলছেন এক অপরিচিত যুবক। জগৎবাবুদের সঙ্গে আরও দু’জন খনিকর্মী ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তাঁরাই যুবকের কোমড়ে দ়ড়ি বেঁধে তাঁকে উদ্ধার করেন। উদ্ধারকাজে যুক্ত খনিকর্মী ওমপ্রকাশ মাহাতো ও বন্ধন মণ্ডলেরা জানান, যুবকের কাছ থেকে তাঁরা জানতে পেরেছেন, তিনি সাইকেলে চ়়ড়ে বাড়ি ফিরছিলেন। আচমকা, রাস্তার মাঝে ধস নামে। টাল সামলাতে না পেরে সাইকেল-সহ তিনি গর্তে পড়ে যান। তবে ওই যুবক গর্তের গা ঘেঁষে যাওয়া টেলিফান-কেব্‌ল ধরে বাঁচার চেষ্টা করেন।

Advertisement

এ দিন ধস নামায় এলাকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দা তপেশ্বর পাসোয়ান, মুন্না দাসেরা জানান, রাস্তার পাশে পাঁচটি কোলিয়ারি আছে। কাজোড়া গ্রাম থেকে উখড়া, সিঁদুলি ও মধুসূদনপুর লাগোয়া এলাকার সঙ্গে কাজোড়া রেলস্টেশন, রানিগঞ্জ শহরে যাওয়ার প্রধান রাস্তাটি গিয়েছে এই এলাকা দিয়েই। সেই রাস্তাতেই ধস নেমেছে। রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় রানিগঞ্জ বা উখড়া যেতে তাঁদের প্রায় দশ কিলোমিটারের বেশি রাস্তা ঘুরতে হচ্ছে বলে জানান এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা, অনেকেই এই রাস্তায় ভোরে ও বিকেলে ঘুরতে বার হন। কোনও কারণে গর্ত বুঝতে না পারলে বিপত্তি বাড়বে। বিষয়টি নিয়ে সিটু নেতা প্রবীর মণ্ডল সরাসরি দায়ী করেছেন ইসিএল কর্তৃপক্ষকে। তাঁর কথায়, “মধুসূদনপুর ইনক্লাইনের ভূগর্ভে কয়লা উত্তোলন চলছে। আজিরবাগান ও লাগোয়া এলাকায় খনির উপরিভাগ ধসপ্রবণ। তাই এখানে কয়লা কাটলে ধস নামতে পারে।’’ সিটু নেতৃত্বের দাবি, ছ’মাস আগেই এই এলাকায় কয়লা না কাটার জন্য ইসিএলের কাছে আর্জি জানানো হয়েছিল। কিন্তু লাভ হয়নি। এই পরিস্থিতিতে এলাকার খনিকর্মী আবাসনগুলি অন্যত্র সরানোর দাবি উঠেছে।

যদিও বিষয়টি নিয়ে ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, “এলাকাটি ধসপ্রবণ। কী ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন