পরেশচন্দ্র দাস। —নিজস্ব চিত্র।
বিজেপি প্রার্থীকে নিগ্রহের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। সোমবার, ভোটের দিন কালনায় তাঁর গাড়ি ভাঙচুর, ব্যক্তিগত সহকারীকে মারধর ও দুই দেহরক্ষীর আগ্নেয়াস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টাও হয় বলে অভিযোগ বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের প্রার্থী পরেশচন্দ্র দাসের। কালনার পুরপ্রধান তথা তৃণমূল নেতা দেবপ্রসাদ বাগের নেতৃত্বে এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ তাঁর। যদিও হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের পাল্টা দাবি, দলের পতাকা লাগানো গাড়িতে এসে বাইরের এলাকার কিছু লোকজনকে নিয়ে প্রার্থী বুথ দখলের চেষ্টা করছিলেন। এলাকার কিছু মানুষজন তা প্রতিরোধ করেছেন।
পুলিশের কাছে বিজেপি প্রার্থী অভিযোগ করেন, এ দিন কাটোয়ার কিছু বুথ পরিদর্শন করে তিনি কালনা শহরে ৯ ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়েছিলেন ভোটগ্রহণ দেখতে। শহরের যোগীপাড়ায় ঢুকতেই তাঁদের উপরে হামলা চালায় তৃণমূলের লোকজন। সেখানে হাজির ছিলেন পুরপ্রধান। পরেশচন্দ্রবাবুর অভিযোগ, তাঁর ডান হাত মুচড়ে দেওয়া হয়। ব্যক্তিগত সহকারী কুমুদ দাসকে মারধর করা হয়। রেহাই পাননি গাড়ির চালকও। দুই নিরাপত্তা রক্ষী এগিয়ে এলে তাঁদের আগ্নেয়াস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয় বলেও প্রার্থীর অভিযোগ।
ঘটনার পরে পরেশচন্দ্রবাবু কালনা থানায় পৌঁছন। খবর পেয়ে দলের নেতা-কর্মীরাও সেখানে যান। থানায় লিখিত অভিযোগ করেন প্রার্থী। তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমার ডান হাতে চোট লেগেছে। ঘটনার সময়ে কাছাকাছি বুথে ছিল আধাসেনা। বাইরে হামলা, গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা দেখেও এগিয়ে আসেনি রাজ্য পুলিশ।’’ দলের উচ্চ নেতৃত্বকেও ফোনে বিষয়টি জানিয়েছেন বলে জানান তিনি। থানা থেকে পরেশচন্দ্রবাবু কালনা মহকুমা হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করান। তার পরে দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে মহকুমাশাসক (কালনা) নীতিশ ঢালিকে অভিযোগপত্র জমা দেন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বিজেপির বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের আহ্বায়ক ধনঞ্জয় হালদারের দাবি, ‘‘যে ভাবে প্রার্থীর উপরে হামলা হয়েছে, আমরা তার নিন্দা করছি। প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে দল আন্দোলনে নামবে।’’ এ দিনই নেতা-কর্মীদের অনেকে রাস্তা অবরোধ, ধর্নায় বসার দাবি তোলেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে বুথে নজরদারি আলগা হয়ে যাবে, সে কথা বিবেচনা করে দলের নেতারা পিছিয়ে আসেন।
তৃণমূল পুরপ্রধানের অভিযোগ, ‘‘আমরা কেউ গাড়ি ভাঙচুর বা মারধর করেনি। বিজেপি প্রার্থীই বরং গাড়িতে পতাকা লাগিয়ে কিছু বহিরাগতকে নিয়ে বুথে ঢোকার চেষ্টা করেন।’’ তিনি এ ব্যাপারে একটি অভিযোগও করেছেন কালনা থানায়। জেলা তৃণমূলের সভাপতি স্বপন দেবনাথের বক্তব্য, ‘‘প্রার্থী হলেও দলীয় পতাকা গাড়িতে লাগিয়ে বুথে উনি ঢুকতে পারেন না। এটা বেআইনি। এর প্রতিবাদ করেছেন স্থানীয় মানুষ।’’