জল্পনা চলছিল সোমবার থেকে। বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে পুরনো প্রার্থীর উপরেই ভরসা রাখবেন দলীয় নেতৃত্ব, নাকি কোনও নতুন মুখ বেছে নেওয়া হবে, চর্চা চলছিল তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে। ‘জনপ্রিয়’ কোনও মুখ প্রার্থী হতে পারেন বলেও রটতে শুরু করেছিল। শেষমেষ অবশ্য বিদায়ী সাংসদ মমতাজ সঙ্ঘমিতাকেই বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে প্রার্থী করলেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। মঙ্গলবার বিকেলে টিভিতে প্রার্থীর নাম শোনার পরে জল্পনার অবসান হয় কর্মীদের মধ্যে। প্রচারে নেমে পড়েন তাঁরা।
২০১৪ সালে প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ সাইদুল হককে লক্ষাধিক ভোটে হারিয়ে দেন বিধানসভার প্রাক্তন স্পিকার মনসুর হাবিবুল্লাহের কন্যা মমতাজ। দল আরও এক বার তাঁকে বেছে নেওয়ার পিছনে কারণ কী? পেশায় চিকিৎসক মমতাজের জবাব, “আমি এলাকায় ঘুরেছি। দলের কর্মী থেকে সাধারণ মানুষ, সকলের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। সাংসদ তহবিলের টাকা থেকে অনেক উন্নয়নমূলক কাজও করেছি।’’
এ দিন দুপুরে বর্ধমান শহরের কয়েকটি দলীয় দফতর ঘুরে অবশ্য দেখা যায়, প্রার্থী কে হচ্ছেন, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন কর্মীরা। দুর্গাপুরে তৃণমূলের নানা অফিসে কর্মীদের একাংশ দাবি করেন, কমবয়সী কাউকে বেছে নেওয়া হতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা। বর্ধমানের তৃণমূল নেতা খোকন দাস অবশ্য দুপুরে বলেন, “দলীয় নেতৃত্ব পুরনো প্রার্থীকেই টিকিট দেবেন বলে মনে করছি।’’ বিকেলে মমতাজ সঙ্ঘমিতার নাম ঘোষণা হতেই বিভিন্ন জায়গায় মিছিল-দেওয়াল লিখন শুরু হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
দুর্গাপুরের জন্য সাংসদ তহবিল থেকে রাস্তা, যাত্রী প্রতীক্ষালয় থেকে প্রেক্ষাগৃহ তৈরিতে সাংসদ তহবিল থেকে অনুদান দিয়েছেন মমতাজ। দুর্গাপুর ও মানকর স্টেশনে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের জন্যও টাকা বরাদ্দ করেছেন। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে প্রায় ২ কোটি ২২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে তাঁর তহবিল থেকে। এ ছাড়া অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য দেওয়া হয়েছে প্রায় এক কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা। সাংসদ তহবিলের টাকায় বর্ধমান ও দুর্গাপুরে দু’টি ট্রমা-অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে। ক্রীড়া ও সংস্কৃিত চর্চার ক্ষেত্রেও অনুদান দেওয়ার ব্যাপারে তিনি নজর রেখেছেন বলে মমতাজ সঙ্ঘমিতার দাবি।
তবে তৃণমূল মমতাজকে ফের প্রার্থী করায় তাঁদের সুবিধা হবে বলে দাবি করেন বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সভাপতি সন্দীপ নন্দী। তাঁর অভিযোগ, “এলাকার মানুষ তো ওঁকে কালেভদ্রে দেখেছেন। এলাকার উন্নয়নে তাঁর কী ভূমিকা, সেটা নিয়েও মানুষের প্রশ্ন রয়েছে।’’