ঘোষণার পরে প্রার্থীর নামে দেওয়াল লিখন করছেন আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি।
বিকেল সাড়ে ৪টে, সোমবার: দুর্গাপুরের ভিড়িঙ্গিতে তৃণমূলের অফিস। অদূরেই আনন্দগোপাল সরণিতে জটলা কয়েক জন তৃণমূল সমর্থকের।
সকাল সাড়ে ১১টা, মঙ্গলবার: আসানসোলের জিটি রোডের ধারে তৃণমূলের জেলা কার্যালয়। ভিতরে, কয়েক জন তৃণমূলকর্মী।
— দু’জায়গাতেই আলোচনা একটাই, দলের প্রার্থী কারা হবেন। সুজয় ঘোষ, বাপি ঘোষ, সৌমেন গড়াই, রাজা দত্ত-সহ দুর্গাপুরের ওই সমর্থকদের মধ্যে এক জন বলে উঠলেন, ‘বর্ধমান-দুর্গাপুরে বদল হবেই। বর্তমান সাংসদ তেমন তৎপর নন। কমবয়সি কেউ হলে ভাল।’ মঙ্গলবার সকালে সিটি সেন্টারের ডেইলি মার্কেটে বাজার করতে এসেছেন সুমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, সূর্যশেখর বসু, অনিমেষ বসু, শ্যামল দত্তেরা। তাঁরা সবাই এলাকায় তৃণমূলের সমর্থক হিসাবে পরিচিত। প্রথম দু’জন বর্তমান সাংসদকেই ফের প্রার্থী করার পক্ষে। অন্য দু’জনের কথায়, ‘‘টালিগঞ্জের এক অভিনেত্রী প্রার্থী হবেন শুনছি। তা হলে ভালই।’’
আসানসোলের ওই কর্মীদের আলোচনা, প্রার্থী কি বাইরের কেউ, না কি জেলার রাজনীতির কোনও চেনা মুখ। মঙ্গলবার দুপুরে তৃণমূলের প্রার্থী ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা আগে থেকেই ‘প্রার্থী কে’, এই আলোচনা নিয়েই সরগরম ছিল জেলার নানা প্রান্ত।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
মঙ্গলবার দুপুরে তৃণমূলের প্রার্থী ঘোষণার পরে দেখা যায়, বর্ধমান-দুর্গাপুরে প্রার্থীবদল হচ্ছে না। প্রার্থী হচ্ছেন, মমতাজ সঙ্ঘমিতাই। তবে ‘চমক’ আসানসোলে। সেখানে তারকা-প্রার্থী মুনমুন সেন। তবে কর্মী, সমর্থকদের মধ্যে জল্পনা-আলোচনা থাকলেও প্রার্থী ঘোষণার পরেই ভোট-ময়দানে নেমে পড়তে দেখা গিয়েছে আসানসোল, দুর্গাপুরের তৃণমূল নেতৃত্বকে। দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় এ দিন গিয়েছিলেন বিদবিহারে। সেখান থেকেই ফোনে বললেন, ‘‘প্রার্থী নিয়ে ভাবার অবকাশই নেই। দলের প্রার্থীকে জেতাতে আমরা সবাই লড়ছি।’’ একই কথা বলেন তৃণমূল নেতা তথা দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র পারিষদ অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কার্যালয়ে টেলিভিশন না থাকায় এ দিন দুর্গাপুরের দলীয় অফিসে ভিড় ছিল না। কিন্তু, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি শরদিন্দু বিশ্বাসদের মতো বহু নেতারাই অন্যত্র গিয়ে নজর রেখেছিলেন টেলিভিশনে।
প্রার্থী ঘোষণার পরেই আবার আসানসোলে সঙ্গীদের নিয়ে প্রচারে নামতে দেখা গিয়েছে আসানসোল পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে। প্রচার শুরু হয়েছে কুলটি, বারাবনি, সালানপুরেও। দুপুরের প্রায় ফাঁকা জেলা কার্যালয়ে বিকেল থেকে ভিড় জমাতে শুরু করেন তৃণমূল নেতা, কর্মীরা। শুরু হয় দেওয়াল লিখনও। প্রার্থীর বিষয়ে কি বলবেন, জিজ্ঞাসা করা হলে জিতেন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘সংগঠন ও প্রার্থী, এই দুইয়ের জোরেই আমরা জিতব।’’ একই কথা বলেছেন আসানসোল পুরসভার মেয়র পারিষদ অভিজিৎ ঘটক, উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়েরাও। ভোটকে কেন্দ্র করে বিকেলে আসানসোলের বিএনআর লাগোয়া তৃণমূল ভবনে জরুরি বৈঠকও হয়েছে।