ED Raid

ইডি অফিসার সেজে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কোটি টাকা আদায়! ইডির হেফাজতেই রায়নার জিন্নার

কী ভাবে অভিযুক্ত জিন্নার তোলাবাজি চালাতেন? ইডি জানিয়েছে, প্রথমে তিনি ব্যবসায়ীদের নিশানা করতেন। তার পরে ইডি অফিসার পরিচয় দিয়ে সেই ব্যবসায়ীকে ফোন করতেন জিন্নার।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৫ ১৭:০২
Share:

শেখ জিন্নার আলি। — নিজস্ব চিত্র।

ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) অফিসার সেজে তোলাবাজির অভিযোগে গ্রেফতার এক ব্যক্তি। ধৃত শেখ জিন্নার আলি পূর্ব বর্ধমানের রায়না থানার খেমতা গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর স্ত্রী এবং সংস্থার নামে থাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে উদ্ধার হয়েছে ৪৫ লক্ষ ৮৯ হাজার টাকা। অ্যাকাউন্টটি ফ্রিজ করেছে ইডি। এ ছাড়াও ধৃতের বাড়ি থেকে দু’টি গাড়ি এবং বেশ কিছু জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত হয়েছে বলে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে ইডি। আদালতে হাজির করানোর পরে ধৃতকে হেফাজতে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা।

Advertisement

ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধাননগর দক্ষিণ থানায় জিন্নারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন এক ব্যবসায়ী। তার ভিত্তিতেই বিধাননগর থানা মামলা রুজু করে। বিষয়টি ইডির নজরে আসে। এর পরেই টাকা নয়ছয় আইনে তদন্ত শুরু করে ইডি। অভিযোগ, কলকাতা এবং বর্ধমানের বিভিন্ন জায়গায় ইডি অফিসার পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দীর্ঘ দিন ধরে টাকা তুলছিলেন জিন্নার।

কী ভাবে জিন্নার তোলাবাজি চালাতেন? ইডি জানিয়েছে, প্রথমে তিনি ব্যবসায়ীদের নিশানা করতেন। তার পরে ইডি অফিসার পরিচয় দিয়ে সেই ব্যবসায়ীকে ফোন করতেন জিন্নার। ব্যবসায়ীকে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট অফিসের সামনে ডেকে পাঠাতেন তিনি। দাবি করতেন, তাঁর ব্যবসায় জালিয়াতি চলছে। মিটিয়ে নেওয়ার কথা বলে মোটা টাকা দাবি করতেন। এক ব্যবসায়ীর থেকে তিনি দেড় কোটি টাকা আদায় করেন বলে অভিযোগ। তার মধ্যে ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা নগদে এবং ২০ লক্ষ টাকা নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা নেন।

Advertisement

আরও অভিযোগ, যে সকল ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ইডির তদন্ত চলত, তাঁদের সঙ্গেও প্রতারণা করতেন জিন্নার। মিটমাটের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি টাকা আদায় করতেন। বুধবার খেমতায় তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডির একটি দল। সেখান থেকে ব্যাঙ্কের বেশ কিছু নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়। ইডি জানিয়েছে, ইডি এবং সরকারি দফতরের আধিকারিকদের ভুয়ো সিলমোহর ব্যবহার করে তিনি প্রতারণা করেছেন। তাঁর বাড়ি থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্যাডও মিলেছে। অ্যান্টি ট্রাফিকিং কমিটির চেয়ারম্যান পরিচয় দিয়েও সে বিভিন্ন জায়গায় প্রতারণা করেছে বলে ইডির দাবি।

তবে, এই প্রথম নয়। ২০১১ সালে পূর্ব মেদিনীপুরের সুতাহাটা থানার পুলিশ প্রতারণার একটি মামলায় জিন্নারকে গ্রেফতার করে। সুতাহাটা থানা এলাকায় প্রশিক্ষণের নাম করে তিনি একটি দফতর খুলেছিলেন। সেখানে প্রশিক্ষণের কথা বলে পড়ুয়াদের থেকে তিনি টাকা তুলেছিলেন বলে অভিযোগ। চাকরি দেওয়ার নাম করে তরুণদের থেকে তিনি ১৬ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। সেই মামলায় গ্রেফতার হন জিন্নার। তার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে বর্ধমান মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের (সিজেএম) আদালতে প্রতারণার মামলা দায়ের করেন তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী। সিজেএম কেস রুজু করে তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন। সেই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট থেকে শর্তাধীন জামিন পান জিন্নার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পরামর্শদাতা পরিচয় দিয়ে প্রতারণায় জিন্নার জড়িত বলে তার স্ত্রী অভিযোগ করেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement