পাঁচ বছর আগেই বার্ণপুরে ইস্কোর সম্প্রসারণ ও রেল ইয়ার্ড তৈরির জন্য নেওয়া জমির দাম বর্ধিত মূল্য দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। মঙ্গলবার ফের সেই টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হল।
বর্ধমানের গোদায় স্বাস্থ্য উপনগরী ও আবাসন তৈরির জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে জমি নিয়েছিল বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থা বা বিডিএ। আদালতের নির্দেশের পরেও বর্ধিত জমির দাম না মেলায় সশরীরে অতিরিক্ত জেলাশাসককে (জমি অধিগ্রহন) তাঁর এজলাসে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
কামনাড়া গ্রামের এক চাষি জমির বর্ধিত দাম বাবদ ১ কোটি ২৩ লক্ষ ১৯ হাজার টাকা পাবেন। কিন্তু বারবার আবেদনের পরেও জমি অধিগ্রহণ দফতর ওই টাকা দেয়নি। ফের আদালতের দ্বারস্থ ওই চাষি।
একের পর এক এ ধরনের ঘটনা জেলা প্রশাসনের মাথাব্যাথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিনই কাজ ফেলে সরকারি কর্মী, আধিকারিকদের আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে। জেলা জমি অধিগ্রহণ দফতর বর্ধিত টাকা চাষির ঘরে জমা পড়ল কি না তা দেখার জন্য আলাদা ‘সেল’ গঠন করেছে। ওই সেলের রিপোর্ট অনুযায়ী, আদালতের নির্দেশের পরেও জমিদাতাদের বর্ধিত টাকা দেয়নি এমন সরকারি দফতর ও বিভিন্ন সংস্থার কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব। তাঁর কড়া নির্দেশ, আদালতের রায় মেনে জমিদাতাদের বর্ধিত টাকা ফেরত দিতে হবে কিংবা আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালত থেকে ‘স্থগিতাদেশ’ নিয়ে আসতে হবে।
জমি অধিগ্রহণ দফতরের এক কর্তার কথায়, “আমরা জমি অধিগ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট বিভাগের হাতে তুলে দিয়েছি। ওই বিভাগই জমিদাতার টাকা দিয়েছে। বর্ধিত টাকাও তারাই দেবে। মাঝখান থেকে আদালতে রোষের মুখে আমরা পড়ছি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘ওই বৈঠকে সাফ বলা হয়েছে, ওই সব সংস্থার জন্য আমরা আর আদালতের কাছে অপ্রস্তুত হতে রাজি নই।” বৈঠক সূত্রেই জানা যায়, জমির বর্ধিত দাম না পেয়ে অনেক জমিদাতা সরকারি দফতর এমনকী, জেলাশাসকের বাংলো পর্যন্ত নিলাম করে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেছেন।
প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, জেলা পরিষদ, ইস্কো, পূর্ব রেলওয়ে, কাটোয়া পুরসভা, পূর্ত দফতর ও বিডিএ নিয়ে ২০৭টি মামলা আদালতে ঝুলে রয়েছে। তার মধ্যে বিডিএ-র বিরুদ্ধেই বর্ধিত জমির দাম চেয়ে ১১৩টি মামলা চলছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (জমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন) রত্নেশ্বর রায় বলেন, “অনেক সংস্থা টাকা দিয়ে দিয়েছে কিংবা উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে এসেছে বলে দাবি করেছে। তাঁদের এক সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।”