কর্মীর অভাব, চেক না নিয়ে ফিরলেন চাষি

গত বৃহস্পতিবার থেকে পূর্ব বর্ধমানে চেকের মাধ্যমে সরাসরি ধান কেনার কথা ছিল। কিন্তু রাজ্য সরকার চেক সময়মত তৈরি করতে পারেনি বলে ‘ধান দাও, চেক নাও’ প্রক্রিয়া পিছিয়ে যায়। এ দিন সেই প্রক্রিয়া শুরু হলেও অত্যাবশকীয় পণ্য নিগম, বেনফেডের মত খাদ্য দফতরের এজেন্সি সংস্থাগুলি সব জায়গায় চেক দিতে পারেনি

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৭:৪০
Share:

—প্রতীকী ছবি।

প্রথম দিনেই জেলার সব জায়গায় হাতে হাতে চেক দিয়ে ধান কিনতে পারল না খাদ্য দফতর। শনিবার কোথাও অনলাইনে ধান কেনা হল। আবার অনেক শিবিরে দেখা গেল, ধানের গাড়ি নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন চাষি। আজ, রবিবার জেলা পরিষদের অঙ্গীকার হলে ধান কেনার প্রক্রিয়ায় যুক্ত সবাইকে নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব। খাদ্য দফতরের রাজ্য পর্যায়ের তিন আধিকারিকেরও থাকার কথা সেখানে।

Advertisement

গত বৃহস্পতিবার থেকে পূর্ব বর্ধমানে চেকের মাধ্যমে সরাসরি ধান কেনার কথা ছিল। কিন্তু রাজ্য সরকার চেক সময়মত তৈরি করতে পারেনি বলে ‘ধান দাও, চেক নাও’ প্রক্রিয়া পিছিয়ে যায়। এ দিন সেই প্রক্রিয়া শুরু হলেও অত্যাবশকীয় পণ্য নিগম, বেনফেডের মত খাদ্য দফতরের এজেন্সি সংস্থাগুলি সব জায়গায় চেক দিতে পারেনি। ফলে, ওই সব জায়গায় অনলাইনে ধান কেনা হয়। চাষিদের জানানো হয়, তিন দিনের মধ্যে তাঁদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা ঢুকে যাবে। অত্যাবশকীয় পণ্য নিগম সূত্রে জানা যায়, জেলায় ১২০টি জায়গা থেকে ধান কিনছে ওই সংস্থা। তার মধ্যে এ দিন মাত্র তিনটে জায়গা থেকে (বর্ধমান ১, গলসির পারাজ ও পূর্বস্থলী) চেকের মাধ্যমে ধান কেনা গিয়েছে। বাকি ১১৭টা জায়গা থেকে পুরনো পদ্ধতিতে ধান কিনেছে অত্যাবশকীয় পণ্য নিগম। এ জেলায় বেনফেড ৩২টি শিবির করেছে। তার বেশির ভাগ জায়গাতেও অনলাইন পদ্ধতিতে ধান কেনা হয়েছে।

চেক দেওয়া গেল না কেন? খাদ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, কলকাতার দফতর থেকে চেকে সই করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ওই এজেন্সি সংস্থায়। কিন্তু ১২০টি জায়গায় চেক-বিলি করার মত কর্মী নেই। সে জন্য প্রথম পর্যায়ে তিনটে জায়গায় চেক বিলি করা হচ্ছে। বাকি জায়গাগুলিতে লোক দেওয়ার জন্যে জেলাশাসককে অনুরোধ করেছে অত্যাবশকীয় পণ্য নিগম। আর বেনফেড ঠিক করেছে, ব্লক পর্যায়ে আধিকারিক ও সমবায়-পরিদর্শকদের দায়িত্ব দেওয়া হবে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘খুব শীঘ্র ওই সব সংস্থার মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পালন করা হবে।’’

Advertisement

এ দিন বর্ধমান শহর লাগোয়া হাঁটুদেওয়ান পিরতলায় একটি চালকলে শিবির করে অত্যাবশকীয় নিগম। ওই এজেন্সির হয়ে ধান কিনছে বর্ধমান থানা কো-অপারেটিভ। এ দিন সেখানে ধান নিয়ে এসেছিলেন মোল্লা মফিজুল রহমান, সত্যনারায়ণ ঘোষেরা। তাঁরা বলেন, ‘‘চেকের লোভে ধান নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু এসে দেখলাম আগের মতই ধান নেওয়া হচ্ছে। বাধ্য হয়ে ধান দিলাম।’’ তবে গাড়ি নিয়ে ফেরত চলে যান শেখ নিজামউদ্দিন। তাঁর কথায়, ‘‘চেক দিচ্ছে না বলে ধানও দিলাম না।’’

খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ৬৮টি শিবির থেকে চাষিদের কাছ থেকে চেক দিয়ে ধান কিনছে খাদ্য দফতর। এ দিন প্রায় দু’হাজার চাষির হাতে চেক তুলে দেওয়া হয়েছে। ধান কেনা হয়েছে ৫ হাজার টন। জেলা খাদ্য নিয়ামক দেবমাল্য বসু বলেন, ‘‘ব্লকের আধিকারিকের মাধ্যমে চাষিদের হাতে চেক তুলে দেওয়া হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন