ক্ষোভ দুর্গাপুর শহরে

বড়দের ওষুধ শিশুকে

দুর্গাপুরের নিউটাউনশিপ থানার পুলিশ জানায়, দুর্গাপুরের সুকান্তপল্লির বাসিন্দা জয় গুহরায়ের মেয়ে আরুষি সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছিল। গত ১১ ডিসেম্বরে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান পরিবারের লোক জন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:১৫
Share:

চলছে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

সাত মাসের শিশু। কিন্তু ভুল করে তাকে ‘বড়দের ওষুধ’ দেওয়ার অভিযোগ উঠল দুর্গাপুরের মামরা বাজারের একটি ওষুধ দোকানের বিরুদ্ধে। এর জেরে শিশুটি অসুস্থও হয়ে পড়ে। এর পরে ওই দোকানের সামনে বিক্ষোভ দেখান পরিবারের লোক জন।

Advertisement

দুর্গাপুরের নিউটাউনশিপ থানার পুলিশ জানায়, দুর্গাপুরের সুকান্তপল্লির বাসিন্দা জয় গুহরায়ের মেয়ে আরুষি সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছিল। গত ১১ ডিসেম্বরে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান পরিবারের লোক জন। জয়বাবুর দাবি, সেই চিকিৎসকের দেওয়া প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে তিনি ওষুধ কেনেন ওই দোকান থেকে। পরিবারের অভিযোগ, ওই ওষুধ খাওয়ানোর পরে শিশুটি আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। শ্বাসকষ্টের সমস্যা আরও বাড়ে। তড়িঘড়ি শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হয় দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে। সেখানের চিকিৎসকেরা জানান, শিশুটি এই মুহূর্তে সুস্থ রয়েছে।

পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, এর পরেই বাড়ির এক জন লক্ষ করেন, শিশুটিকে যে ওষুধ খাওয়ানো হয়েছে, আসলে তা বড়দের শ্বাসকষ্টজনতি সমস্যার ওষুধ।

Advertisement

পরিবারের অভিযোগ, ওই দোকানের এক কর্মী এই বিপত্তি ঘটেছে। এর পরে শুক্রবার সন্ধ্যায় দোকানের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন পরিবারের লোক জন। বিক্ষোভের খবর শুনে এলাকায় চলে আসেন পেশায় অটোচালক তারক সামন্ত নামে এক জন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তারকবাবুও অভিযোগ করেন, বছর খানেক আগে এই একই দোকান থেকে তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী’কে ভুল ওষুধ দেওয়া হয় এবং তাঁর স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিক্ষোভ দেখেই দোকান ফেলে চম্পট দেন দোকান মালিক লালন বার্নবাল এবং কর্মীরা।

বিক্ষোভের খবর শুনে ঘটনাস্থলে চলে আসেন মামরা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির কয়েক জন এবং নিউটাউনশিপ থানার পুলিশ। দু’পক্ষ সিদ্ধান্ত নেয়, দোকানটিতে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার। সমিতির সম্পাদক স্বপন সরকার বলেন, ‘‘এটা জীবন-মরণের প্রশ্ন। পরিবারটি এবং দোকান মালিক, দু’পক্ষ মিলে বসে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। তার পরে প্রয়োজনে পুলিশেরও দারস্থ হওয়া যাবে।’’

দোকান মালিক লালনবাবুর সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তবে তাঁর দাদা, মুকুন্দ বার্নবাল বলেন, ‘‘আমাদের কর্মীরা দোকানে ছিলেন। এমন ভুল করা অন্যায়। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখব কে এমন কাজ করেছে।’’

শিশুটি আপাতত সুস্থ থাকলেও এই ধরনের ঘটনায় পরিবার ও চিকিৎসক মহল রোগীর নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে। তাঁদের দাবি, এমন ক্ষেত্রে বড়সড় বিপত্তিও তো ঘটতে পারত। মহকুমা হাসপাতালের সুপার দেবব্রত দাসও বলেন, ‘‘বড়দের ওষুধ শিশুর উপর প্রয়োগ হলে নানা রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। এমনকী কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রাণ সংশয়ও ঘটতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন