মিড-ডে মিল, স্কুলের তহবিল তছরুপের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন বেনাচিতির ভারতীয় হিন্দি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক। তিনি বরখাস্তও হয়েছেন। তার পরে থেকেই স্কুলে বন্ধ মিড-ডে মিল। এমনকী মহকুমাশাসকের নির্দেশেও মিল চালু করতে স্কুল কর্তৃপক্ষ উদ্যোগী হননি বলে অভিযোগ অভিভাবকদের একাংশের।
স্কুল সূত্রে খবর, পড়ুয়াদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ‘ফি’ নেওয়ার অভিযোগ ওঠায় প্রধান শিক্ষক ধর্মেন্দ্র প্রসাদকে মহকুমা প্রশাসন বহু বার সতর্ক করেছিল। মাঝেসাঝে মিড-ডে মিল বন্ধ থাকারও অভিযোগ জানান অভিভাবকেরা। সেই সময়ে ধর্মেন্দ্রবাবু দাবি করেন, মিড-ডে মিলের টাকা প্রতি চার মাস অন্তর স্কুলে আসে। ধারে সামগ্রী পাওয়া না যাওয়ায় মাঝেসাঝে মিল বন্ধ রাখতে হয়। যদিও প্রশাসন সেই যুক্তি মানতে চায়নি। এর পরেই ধর্মেন্দ্রবাবুর বিরুদ্ধে মিড-ডে মিল ও স্কুল তহবিল তছরুপের অভিযোগ ওঠে। তদন্তে নামেন পুরসভার তৎকালীন কমিশনার কস্তুরী সেনগুপ্ত। অভিযোগের সত্যতা মিলেছে, এই দাবিতে দুর্গাপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। গত এপ্রিলে ওই প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতারির পরে থেকেই স্কুলে মিড-ডে মিল বন্ধ রয়েছে। অভিভাবকেরা জানান, পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত এই স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ১৩০০। তাদের অনেকেই অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবার থেকে আসা। প্রায় পাঁচ মাস ধরে মিল বন্ধ থাকায় তারাই সবথেকে বেশি সমস্যায় বলে দাবি অভিভাবকদের। পুজোর মরসুমে কয়েক দিন স্কুল খুললেও পরিস্থিতির বদল হয়নি।
কিন্তু কেন এমনটা? স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, মিড-ডে মিলের গুদামঘর ও রান্নাঘরের চাবি ধর্মেন্দ্রবাবুর কাছে রয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, ধর্মেন্দ্রবাবু জানিয়েছেন, আদালত নির্দেশ দিলে, তবেই তিনি চাবি ফেরত দেবেন। বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের বৈঠক, প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়া, সবই হয়েছে। অভিযোগ, তার পরেও পরিস্থিতি বদলায়নি।
দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা অবশ্য জানান, তিনি স্কুল কর্তৃপক্ষকে ঘরের তালা ভেঙে মিল চালুর নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘পুজোর আগেই মিড-ডে মিল চালু করতে উদ্যোগী হয়েছিলাম। তার পরেও কেন হল না, খোঁজ নিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ অভিভাবকদের ক্ষোভ, মহকুমা প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগী হলেও স্কুল কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। যদিও নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, নানা সমস্যার কারণে মিল চালু করা যায়নি।