প্রতীকী ছবি।
কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরেই নড়ে বসল পুরসভা ও জেলা পরিষদ। মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানের পাঁচটি পুরসভার চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদের সভাধিপতি চিঠি দিয়ে ডেঙ্গি প্রতিরোধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলেন সমস্ত কাউন্সিলর এবং পঞ্চায়েত সমিতি ও পঞ্চায়েতের সদস্যদের। এলাকায় সচেতনতার প্রচার ও মশা জন্মাতে পারে এমন জায়গা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। ডেঙ্গি-মোকাবিলা করার জন্য স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে বৈঠকও শুরু করেছে পুরসভাগুলি। বর্ধমান পুরসভা জঞ্জাল-বিভাগের কর্মীদের ছুটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সোমবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের সমস্ত পুরসভা ও পঞ্চায়েতকে ডেঙ্গি প্রতিরোধে পুরোদমে মাঠে নামার নির্দেশ দিয়েছেন। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘পুরসভা ও জেলা পরিষদের সঙ্গে এ নিয়ে নিয়মিত কথা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমতো আইসিডিএস এবং আশা-কর্মীরা বাড়ি-বাড়ি প্রচার চালাবেন। একই সঙ্গে আমরা একশো দিনের কাজের সুপারভাইজার ও বিভিন্ন স্কুলের কন্যাশ্রী ক্লাবের সদস্যদেরও প্রচার চালাতে বলেছি।” জেলা প্রশাসনের ধারণা, স্কুলের মেয়েরা বাড়ি-বাড়ি গিয়ে প্রচার করলে ডেঙ্গি সচেতনতা প্রচার অনেক বেশি কার্যকর হবে। তারা জমা জল ফেলে দেওয়া বা আবর্জনা সাফ করার কথা বললে মহিলারা সচেতন হবেন। বাড়ির মহিলারা সচেতন হলে মশার দৌরাত্ম্যও অনেক কম হবে বলে কর্তারা মনে করছেন।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, জেলায় ২৫০ জন রোগীর রক্তের নমুনায় ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। তার মধ্যে উদ্বেগজনক বর্ধমান পুরসভা ও পূর্বস্থলী ১ ব্লকের পরিস্থিতি। এই দুই এলাকায় যথাক্রমে ৩১ ও ২৬ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। এ ছাড়াও পূর্বস্থলী ২ ব্লকে ১২ জন, কাটোয়া ১ ব্লকে ১৮, কাটোয়া ২ ব্লকে ১৫, কেতুগ্রাম ১ ব্লকে ১৪, কেতু্গ্রাম ২ ব্লকে ১২ ও মঙ্গলকোটে ১৬ জনের রক্তে ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। কাটোয়া ও কালনা পুরসভা এলাকাতেও ডেঙ্গি রোগীর সন্ধান মিলেছে। তবে জেলার কোথাও ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবর নেই বলে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের দাবি।
স্বাস্থ্য দফতরের দাবির সঙ্গে অবশ্য একমত নয় বর্ধমান পুরসভা। পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত বলেন, ‘‘আমাদের শহরে ১১ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানি। আমরা খুব গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখছি। প্রতিটি কাউন্সিলরকে নিজেদের এলাকা দেখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” পুর পারিষদ (স্বাস্থ্য) অরূপ দাসের কথায়, “প্রতিটি ওয়ার্ডে মশা মারার তেল স্প্রে ও ধোঁয়া দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।” সোমবার রাতেই পুর-পারিষদ (জঞ্জাল) খোকন দাস শহরের কালনা রোড-সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন। তিনি বলেন, “আপৎকালীন পরিস্থিতিতে শহরকে আবর্জনামুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আপাতত বিভাগের সব কর্মীর ছুটি বাতিলেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”