জখম ব্যবসায়ী।— নিজস্ব চিত্র।
মাথায় বন্দুকের বাঁট দিয়ে মেরে এক ব্যবসায়ীর টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে পালাল দুষ্কৃতীরা। ওই ব্যবসায়ীর চিৎকারে আশপাশের আরও কয়েকজন ব্যবসায়ী জড়ো হলে দুষ্কৃতীরা বোমা ও শূন্যে গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালায় বলেও তাঁর অভিযোগ। সোমবার রাতে কাটোয়া নতুনহাট রোডে মঙ্গলকোটের বুঁইচি বাসস্ট্যান্ডের ওই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাত ৮টা নাগাদ ধান ও সারের ব্যবসায়ী, বুঁইচি গ্রামেরই বাসিন্দা অপূর্ব মণ্ডল বাসস্টপের কাছে দোকানে তালা দিচ্ছিলেন। তাঁর সঙ্গে ব্যাগে বেশ কয়েক হাজার টাকাও ছিল। অভিযোগ, তখনই মুখে গামছা বাঁধা তিন দুষ্কৃতী পিছন থেকে অপূর্ববাবুকে চেপে ধরে। অপূর্ববাবু টাকার ব্যাগটি চেপে ধরে ‘বাঁচাও. বাঁচাও’ চিৎকার করতে শুরু করলে ওই দুষ্কৃতীরা বন্দুকের বাঁট দিয়ে তাঁর মাথায় বেশ কয়েকবার আঘাত করে। অপূর্ববাবুর কথায়, ‘‘বন্দুকের বাঁট দিয়ে বারবার মাথায় আঘাত করায় রক্তে শরীর ভেসে যায়। হাত থেকে ব্যগটিও পড়ে যায়। সেই সুযোগেই টাকার ব্যাগটি নিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা।’’ অপূর্ববাবুকে প্রথমে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে পরে সেখান থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদেরও দাবি, চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে তাঁরা দোকান থেকে বেরিয়ে এসে দুষ্কৃতীদের পিছু নেন। কিন্তু তাঁদের লক্ষ্য করে রাস্তার উপর পরপর বেশ কয়েকটা বোমা ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। তারপর শূন্যে গুলি ছুড়তে ছুড়তে খেতজমি ধরে পালিয়ে যায়। ঘটনার পরে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ বুঁইচি গ্রাম যায়। পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয় ব্যবসাদার ও বাসিন্দারা। বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে জানান, মাস ছ’য়েক আগে এই বাসস্টপ এলাকার একটি আড়ত থেকে রাতে ট্রলিসমেত ট্রাক্টর নিয়ে এসে বস্তা ভর্তি ধান লুঠ করে চম্পট দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। সেই ঘটনারও কোনও কিনারা হয়নি। তবে এ দিনের ঘটনার কোনও অভিযোগ এখনও হয়নি। অপূর্ববাবুর পরিজনদের যদিও দাবি, “সুস্থ হয়ে ওঠার পরেই থানায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে অপূর্ববাবু অভিযোগ করবেন।” তবে জেলা পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, “মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত কোনও অভিযোগ হয়নি। ওই ব্যবসায়ী অভিযোগ দায়ের না করলে আমরাই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মঙ্গলকোট থানায় মামলা রুজু করব।”