ডেবিট কার্ড বদলে নিমেষে টাকা গায়েব

কাউন্টারের ভিতরে দাঁড়িয়েছিল হিন্দিভাষী বছর তিরিশের এক যুবক। টাকা তুলতে অনেককে সাহায্যও করছিল সে। ভরসা করে তাকে ডেবিট কার্ডটি দেন পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী ২ ব্লকের শ্যামবাটি গ্রামের বাসিন্দা বাবলু দাস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৭ ০১:১৭
Share:

সামনেই পুজো। তাই পুজোর বাজারটা সেরে ফেলবেন ভেবে টাকা তুলতে এটিএম কাউন্টারে গিয়েছিলেন অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মী।

Advertisement

কাউন্টারের ভিতরে দাঁড়িয়েছিল হিন্দিভাষী বছর তিরিশের এক যুবক। টাকা তুলতে অনেককে সাহায্যও করছিল সে। ভরসা করে তাকে ডেবিট কার্ডটি দেন পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী ২ ব্লকের শ্যামবাটি গ্রামের বাসিন্দা বাবলু দাস।

তাঁর সামনেই কার্ড ‘সোয়াইপ’ করে ‘পিন’ (পার্সোনাল আইডেন্টিফিকেশন নম্বর) জেনে টাকা তুলে দেয় ওই যুবক। বাড়ি ফিরে আসেন ওই বৃদ্ধ। পরে মোবাইলে অ্যাকাউন্ট থেকে পরপর টাকা সরানোর (ট্রান্সফার) এসএমএস ঢুকতেই মাথায় বাজ পড়ে তাঁর।

Advertisement

অভিযোগ, অল্প সময়ের মধ্যেই কয়েক ধাপে বাবলুবাবুর অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হয়ে যায় দু’লক্ষ ৭৪ হাজার টাকা। সঙ্গে সঙ্গে ব্যাঙ্কে যান তিনি। কিন্তু ব্যাঙ্কের ম্যানেজারকে ডেবিট কার্ড দেখাতে গিয়ে ফের চমক। সেটি নকল! বদলে গিয়েছে।

সম্প্রতি পানাগড় সেনা ছাউনি থেকে অবসর নিয়েছেন বাবলুবাবু। তাঁর দাবি, ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের পারুলিয়া বাজার শাখায় ৩ লক্ষ ৫২ হাজার টাকা ছিল তাঁর। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ পারুলিয়া বাজারের এটিএম কাউন্টারে ওই যুবকের সাহায্যে ৬ হাজার টাকা তোলেন তিনি।

দুপুর পৌনে একটা নাগাদ তাঁর মোবাইলে মেসেজ আসে, ৪০ হাজার টাকা অন্য একটি অ্যাকাউন্টে সরানো হয়েছে। বাবলুবাবুর দাবি, ব্যাঙ্কে পৌঁছনোর
আগেই আরও পাঁচ বার একই অঙ্কের টাকা ‘ট্রান্সফার’ হয়ে যায়। ব্যাঙ্কে পৌঁছে কথা বলতে বলতে শেষ ‘মেসেজ’টি আসে। ওই ‘মেসেজে’ জানানো হয়, ৩৪ হাজার টাকা ‘ট্রান্সফার’ হয়ে গিয়েছে।

এই ঘটনায় শুক্রবার রাতে পূর্বস্থলী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বাবলুবাবু। তিনি বলেন, ‘‘ব্যাঙ্ক ম্যানেজার বলেন, ডেবিট কার্ড আমার কাছে থাকলে অন্য কারও পক্ষে টাকা তোলা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। আমি কার্ড বার করতে ব্যাঙ্ককর্মীরা সেটা পরীক্ষা করে বলেন, ওটা নকল। বুঝতেই পারলাম না কোন সময়ে ছেলেটা হাতসাফাই করল!’’

এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, তিনটি অ্যাকাউন্টে ৮০ হাজার টাকা করে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে দু’টি ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া এলাকার এবং একটি নদিয়া জেলার অ্যাকাউন্ট বলে দাবি করেছে তদন্তকারী পুলিশ। পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল জানিয়ছেন, ওই অ্যাকাউন্টগুলি সম্পর্কে বিশদে খোঁজখবর করা শুরু হয়েছে। বাবলুবাবুর দেওয়া বিবরণ অনুযায়ী ওই যুবকেরও খোঁজ চালানো হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পারুলিয়ার ওই ব্যাঙ্ক শনিবার বন্ধ থাকায় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কালনা শাখার ম্যানেজার শনিবার জানিয়েছেন, ডেবিট কার্ড ও ‘পিন’ জানা থাকলে টাকা ‘ট্রান্সফার’ করা সম্ভব। সেই সঙ্গে তাঁর পরামর্শ, টাকা তোলার সময়ে অপরিচিত কোনও ব্যক্তির হাতে কার্ড তুলে দেওয়া বা তাদের ‘পিন’ জানানো— কখনই উচিত নয়। কারণ, এমনটা হলে বিপত্তির সম্ভাবনা বাড়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন